বাংলাদেশকে দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে না দেয়ার আহ্বান

0
79

বাংলাদেশকে দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে না দেয়ার জন্য তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।

%e0%a6%86%e0%a6%b9%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%a8সোমবার (২৪ অক্টোবর) নগরীর ডিসি হিলে এক ছাত্র-গণজমায়েতে তিনি বলেন, আসুন আমরা মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতাকে প্রত্যাখান করি।  আমাদের কাছে জীবন মানে হত্যা আর খুনোখুনি নয়।  আমাদের কাছে জীবন মানে হচ্ছে ভালবাসা আর সম্প্রীতি।  আমি আপনাদের কাছে আহ্বান জানাই, এই দেশটাকে আপনারা দুর্বৃত্তের হাতে ছেড়ে দেবেন না।

‘জেগে ওঠো বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে পাঁচ বিশিষ্টজন এই ছাত্র গণজমায়েতের ডাক দেন।  এরা হলেন, শহীদ জায়া বেগম মুশতারি শফি, বরেণ্য শিক্ষাবিদ ড.অনুপম সেন, কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, অর্থনীতিবিদ ড.মঈনুল ইসলাম এবং শিক্ষাবিদ প্রফেসর রণজিৎ দে।

গণজমায়েতে সুলতানা কামাল তরুণদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আপনি নিজেকে কেমন দেখতে ‍চান ? আপনি নিজে যদি অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক হোন, তাহলে দেশও অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক হবে।  দেশ মানে শুধুমাত্র একটি ভূখন্ড নয়, দেশ হচ্ছে একটা মানুষ।  আপনি নিজেকে যেভাবে তৈরি করবেন, দেশও সেভাবেই এগিয়ে যাবে।

‘ইতিহাস জানতে হবে।  উত্তরাধিকার সম্পর্কে জানতে হবে।  নিজের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ধারণ করতে হবে। ’ বলেন সুলতানা কামাল।

তিনি বলেন, একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করতে।  অথচ আমরা এখন ক্রমশ: মাথা নত করছি।  আমরা সবসময় আপোষ করছি।  সাম্প্রদায়িকতা, বৈষম্য আর অসাম্যের কাছে আপোষ করছি।  আপোষ করতে গিয়েই জঙ্গিবাদের জন্ম হচ্ছে।

‘জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িকতা আমাদের কি শেখাচ্ছে ? আমাদের শেখাচ্ছে আমাদের মতের বাইরে কারও বেঁচে থাকার অধিকার নেই।  এভাবে ভাবছি বলেই দিন দিন আমরা দুর্বল হয়ে পড়ছি।  এজন্য ভালবাসা দিয়ে কারও মন জয় করতে আমরা পারছি না।  আমাদের অস্ত্র ধরতে হচ্ছে।  আমরা খন্ড আর ক্ষুদ্র হচ্ছি। ’ বলেন সুলতানা কামাল।

একই জমায়েতে নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, সাম্প্রদায়িকতা মানুষের চেতনার গভীরে গিয়ে প্রবেশ করেছে।  সাম্প্রদায়িকতাকে আঘাত করতে না পারলে জঙ্গিবাদ হয়ত দমন করা যাবে কিন্তু নির্মূল করা যাবে না।  সাম্প্রদায়িকতাকে আঘাত করার জন্য চাই সাংস্কৃতিক পুর্নজাগরণ।

গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কী স্বত:স্ফূর্ত একটি আন্দোলন ছিল, প্রাণের টানে মানুষ ছুটে গেছে সেই আন্দোলনে।  সেই আন্দোলনটা কেন স্তিমিত হয়ে গেল ? এত বড় একটা অর্জন আমরা কেন বিসর্জন দিলাম।

‘সংসদে আইন পাশ হওয়ার পরই যদি আন্দোলনটা বন্ধ করে দেয়া হত, যদি মাঝে মাঝে সমাবেশ ডাকা হত তাহলে আমরা এখনও হয়ত গণজাগরণ মঞ্চ দেখতে পেতাম। ’ বলেন রামেন্দু মজুমদার।

‘ধর্মান্ধতা জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে চাই গণজাগরণ’ শীর্ষক জমায়েতে শিক্ষাবিদ ও সমাজবিজ্ঞ‍ানী ড.অনুপম সেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি সংগঠক ডা.সরওয়ার আলী, প্রফেসর রণজিৎ দে এবং কবি আবুল মোমেন।

অনুষ্ঠানে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গান, নাচ ও মূকাভিনয় পরিবেশন করেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।