সময়টা হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বিকেল ভালো নয়

0
50

বিকেল সময়টা হাসপাতালে যাওয়ার জন্য খুব একটা ভালো নয়। কেন আপনার বিকেলে হাসপাতালে যাওয়া উচিত নয়, তা এ প্রতিবেদন পড়লেই বুঝতে পারবেন।

* এটি আপনার সার্কাডিয়ান রিদমের বিরুদ্ধে যায়
লাঞ্চের পর ক্লান্তি শুরু হয় এবং কর্মক্ষমতা বা ইচ্ছা হ্রাস পায়। আমেরিকান ডায়েটিক অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র লারা স্যান্ডন এলিট বলেন, ‘আমাদের শরীরে ন্যাচারাল রিদম বা ঘড়ি সেট করা আছে, তাই বিকেল ২-৩ টার দিকে অনেকে সামান্য ঘুমপ্রবণ হয়ে পড়ে। কিছু সংস্কৃতিতে সিয়েস্তা (বৈকালিক বিশ্রাম বা ন্যাপ) আছে এবং লোকজন লাঞ্চের পর অল্প বিশ্রাম নিয়ে কাজে অধিকতর ভালোভাবে মন দিতে পারে।’ চিকিৎসক ও নার্সদেরও বৈকালিক বিশ্রামের প্রয়োজন আছে, কারণ তারা ক্লান্ত থাকলে বা অমনোযোগী থাকলে ফলাফল সর্বনাশা হতে পারে।

* অ্যানেসথেশিওলজিস্টরা বেশি ভুল করে
আপনার পিঠ বা হাঁটুর বড় ধরনের সার্জারি করাতে হবে? তাহলে বিকেল ২ টার পূর্বেই এটির শিডিউল ঠিক করুন, নয়তো আপনি সাফার করতে পারেন। ওয়ান ডিউক ইউনিভার্সিটি কর্তৃক সম্পাদিত ৯০,০০০ হসপিটাল সার্জারির রিভিউ অনুসারে, অ্যানেথেসিওলজিস্টরা বিকেল ৩-৪ টার সময় সার্জারিতে তুলনামূলক অধিক ভুল করেছিল। সকাল ৯ টায় একটি ভুলের পরিমাণ ছিল ১ শতাংশ, কিন্তু বিকেল ৪ টায় ছিল ৪.২ শতাংশ। অ্যানেসথেশিওলজিস্টদের ভুলের কারণে রোগীদের প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ ছিল সকাল ৮টায় ০.৩ শতাংশ এবং বিকেল ৩ টায় ১ শতাংশ। গবেষকরা এই ভুলকে ‘আফটারনুন সার্কাডিয়ান লো’ নামে আখ্যায়িত করেছে, যা ফিজিশিয়ানদের সতর্কতা হ্রাস করে।

* শিফট পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি
বিকেলে সার্জারির শিডিউল না করার একটি কারণ হচ্ছে, শিফট পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা। আপনার সার্জারি একটি টিম শুরু করতে পারে এবং অন্য টিম শেষ করতে পারে। সার্জারিতে নতুন টিম আসার ফলে অ্যানেসথেশিওলজিস্ট ও চিকিৎসকদের দ্বারা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কিন্তু একটি টিম পুরো সার্জারি সম্পন্ন করলে আপনার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা খুব কম।

* আপনাকে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করা হতে পারে
এখন অধিকাংশ লোক জানে যে, প্রত্যেক অসুস্থতার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক সমাধান নয়। প্রকৃতপক্ষে, অ্যান্টিবায়োটিক ভালোর চেয়েও বেশি ক্ষতি করতে পারে। জেএএমএ ইন্টারনাল মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, দিনের একেকটি ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের দ্বারা অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়, যা অনেকসময় সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়, যেমন- ভাইরাসের ক্ষেত্রে।

* ক্যানসার শনাক্তের জন্য এটি মন্দ সময়
হাসপাতাল ও জেনারেল প্র্যাকটিশনার উভয়ের ওপর বিকেলের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ১,০০০ এর বেশি কোলনোস্কপির একটি গবেষণায় পাওয়া যায়, বিকেলে চিকিৎসকদের পলিপ (যা ক্যানসারে রূপ নিতে পারে) শনাক্ত করার সম্ভাবনা কম। বিকেলের প্রত্যেকটি ঘণ্টা অতিক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পলিপ শনাক্তকরণের হার ৫ শতাংশ করে কমে যায়।

* স্টাফদের হাত ধোয়ার সম্ভাবনা কম
আপনি মনে করতে পারেন যে, প্র্যাকটিশনাররা হচ্ছে পৃথিবীর সেসব লোকদের দলে যারা হ্যান্ডওয়াশিং এড়িয়ে যায় না। কিন্তু ৪,০০০ এরও বেশি কেয়ারগিভারের ওপর সম্পাদিত ২০১৫ সালের একটি গবেষণায় পাওয়া যায়, তারা সুযোগ ও পেশাগত বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও যতবার হ্যান্ডওয়াশ করা উচিত ততবার করেন না। বিকেলে হাত না ধোয়ার পরিমাণ আরো বেশি, যারা সকালে ডিউটি শুরু করে তাদের বিকেলে হ্যান্ডওয়াশিংয়ের হার ৩৮ শতাংশ কম।