বিপিআই’র ‘এলপিজি সিলিন্ডার-এর সঠিক ব্যবহার ও নিরাপত্তা’ প্রশিক্ষণ

0
295

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের (বিপিআই) উদ্যোগে ‘এলপিজি সিলিন্ডার-এর সঠিক ব্যবহার ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত বিপিআইয়ের মিলনায়তনে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণে প্রথমবারের মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বসুন্ধরা এল পি গ্যাস লি. অংশগ্রহণ করে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তিনি আজ সকালে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন জনাব মাহবুবা ফারজানা (পরিচালক, প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইন্সটিটিউট), মো. সামসুল আলম (প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক, বিস্ফোরক পরিদপ্তর, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়), ড. মো. আব্দুল হান্নান (বিস্ফোরক পরিদর্শক, বিস্ফোরক পরিদপ্তর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়), ক্যাপ্টেন শেখ এহসান রেজা (অব.) (মানবসম্পদ প্রধান, সেক্টর-এ, বসুন্ধরা গ্রুপ), জনাব জেড এম আহমেদ প্রিন্স (হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট, সেক্টর-এ, বসুন্ধরা গ্রুপ), জনাব জাকারিয়া জালাল (জিএম, সেলস, বসুন্ধরা এল পি গ্যাস লি.)। মো. সামসুল আলম, ড. মো. আব্দুল হান্নান এবং প্রকৌশলী জাকারিয়া জালাল আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা এল পি গ্যাসের বিপণন, প্রকৌশলী এবং বিতরণ বিভাগের কর্মকর্তাগণ।

উদ্বোধনী বক্তব্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার আসলে নিরাপদ জ্বালানি, এটাই আমরা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে সবাইকে বোঝাতে চাই। এলপিজি ব্যবহার মানেই সকলের মনের মধ্যে বিস্ফোরণের কথা আসে, অথচ বাসা বাড়িতে বৈদ্যুতিক লাইন এবং গাড়িতে সিএনজি সিলিন্ডার থেকেও অধিক নিরাপদ এলপিজি সিলিন্ডার। শুধু প্রয়োজন একটু সচেতনতার। বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে এমন উদ্যোগ আমাদের এবারই প্রথম, আমরা চাই বসুন্ধরা এলপি গ্যাস কোম্পানির মতো আরো প্রতিষ্ঠান আমাদের প্রশিক্ষণ কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের কাজকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। এসময় তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের সকল কর্মকর্তাদের ধন্যবাদও জানান।

কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা জানান, দেশে এখন যত ধরনের জনসম্পৃক্ত খাত আছে, তার মধ্যে অন্যতম এলপি গ্যাস। অবশ্য সাধারণ মানুষের অসচেতনতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে এলপিজির ওপর এক ধরনের ভীতি তৈরি হচ্ছে। যদিও দুর্ঘটনার জন্য সিলিন্ডারের কোনো ভূমিকাই নেই। তাই সম্ভাবনার এলপি গ্যাস মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে হলে অবশ্যই গ্রাহকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার রীতি ও সচেতনতা বাড়াতে হবে। আর এই দায়িত্ব নিতে হবে এলপিজি বিতরণকারী কম্পানিগুলোকেই।

ক্যাপ্টেন শেখ এহসান রেজা (অব.) বলেন, পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে এমন প্রশিক্ষণ সত্যিই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রাইভেট সেক্টরে থাকা প্রতিষ্ঠানকে প্রদত্ত এমন প্রশিক্ষণ আমাদের সাহস জোগায় আরো সামনে এগিয়ে যেতে। আমরা প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদেরও প্রশিক্ষিত করব, যেনো সকলেই এলপিজি ব্যবহারে নিজে সচেতন হতে পারে এবং অন্যদেরও সচেতন করতে পারে। বসুন্ধরার সবার পক্ষ থেকে তিনি বিপিআইয়ের সকলকে সাধুবাদ জানান এমন প্রশিক্ষণ আয়োজনের জন্য।

কর্মশালায় জাকারিয়া জালাল নিরাপদ এলপিজি মজুদ, হ্যান্ডলিং এবং পরিবহন সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে এলপিজি মজুদ এবং বিপণন কম্পানির দায়িত্ব সম্পর্কে কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, এলপিজি দুর্ঘটনা অনুসন্ধানে বিস্ফোরক অধিদপ্তর যতগুলো প্রতিবেদন তৈরি করেছে তাতে দেখা গেছে, এলপিজির কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। মানুষের অসচেতনতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। কোথাও দুর্ঘটনা ঘটলে বলা হয় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে। কিন্তু বলা হয় না কোনটা বিস্ফোরণ হয়েছে। এটা কি এলপিজি, না প্রাকৃতিক গ্যাস। এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার গ্রামের মানুষও ব্যবহার করে। তারা অনেকেই কম জানাশোনা মানুষ। তাই এটার ব্যবহার শেখানোর দায়িত্ব আমাদের, এলপিজি ব্যবসায়ীদের। এলপিজি গ্যাসের জন্য কেমন ঘর লাগবে, জানালা থাকতে হবে কি না, তা আমাদেরকেই বলতে হবে।