বৃক্ষের জন্য সম্মিলিত শোক, প্রতিবাদ

0
80

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট>>

অযৌক্তিক কারণ দেখিয়ে কেটে ফেলা হলো গাছটি বৃক্ষের জন্য সম্মিলিত শোক, প্রতিবাদ

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদদীন হলের মূল ফটকের সামনেই ছিল একটি অ্যারোকেরিয়া গাছ। হলের ছেলেরা ভালোবেসে ডাকতো ক্রিসমাস ট্রি। অথচ গতকাল বৃহস্পতিবার কাউকে কিছু না জানিয়েই হাজারও ছাত্রের স্নেহের ভালোবাসার স্মৃতিবিজরিত গাছটি কেটে ফেলে হল প্রশাসন।

ওই রাতেই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হলের মূল ফটকে তৈরি করে ‘নিন্দা চত্বর’। এর আগেও প্রশাসন এভাবে অনেক গাছ কেটে ফেলেছে বলে তারা অভিযোগ করেছে।

এদিকে ‘নিন্দা চত্বর’ করেই প্রতিবাদ শেষ হয়নি। শুক্রবার দুপুরে কেটে ফেলা গাছটির গোড়ায় কালো পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছে ছাত্ররা। এরপর চারদিক থেকে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেছে তারা।

একটি গাছে নয়, যেন করাত চালানো হলো হাজারও ছাত্রের বুকে। প্রিয়জনকে হত্যা করলে মানুষ যেমন শোকে বিহ্বল হয়, গাছটি কেটে ফেলায় ছাত্রদের যেন তেমনি অবস্থা। মানববন্ধনে ছিল শোকের আবহ। ছিল কালো কাপড়ের জমিনে সাদা অক্ষর। ব্যানারে লেখা ছিল ‘হলের প্রতিষ্ঠাকালীন বৃক্ষ ও সৌন্দর্যবর্ধক ‘ক্রিসমাস বৃক্ষটি’ কেটে ফেলার প্রতিবাদে মানববন্ধন।
বহু শিক্ষার্থীর স্মৃতিবিজড়িত সেই গাছ বৃক্ষের জন্য সম্মিলিত শোক, প্রতিবাদ

বাংলামেইল২৪ডটকমশিক্ষার্থীদের বলে, মানুষ মানুষের শত্রু হয়। কিন্তু গাছ কীভাবে মানুষের শত্রু হয়! এটি শুধু একটি গাছ নয় ছিল আমাদের প্রিয়জনের মতই। কারণ এ গাছের সাথে মিশে আছে আমাদের সুখ-দুঃখ ও আনন্দ-বেদনার স্মৃতি।

এসময় তারা কবি জসীম উদদীন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক রহমত উল্ল্যাহর পদত্যাগও দাবি করে।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া ছাত্ররা বলে, যতদিন পর্যন্ত প্রভোস্ট প্রকাশ্যে এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে নতুন গাছ রোপণ না করবেন ততদিন এখানে কালো পতাকা থাকবে।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেয় হলের শিক্ষার্থী শেখ নুর আলম, আলী ইমরান, জহিরুল, শিমুল, আবির প্রমুখ।

এদিকে কেটে ফেলা বৃক্ষটিকে ছাত্ররা ‘শহীদ বৃক্ষ’ আখ্যা দিয়েছে। গাছটি নিয়ে ছাত্রদের স্মৃতিকথন নিয়ে একটি কাগজও টাঙানো হয়েছে ‘নিন্দা চত্বর’ এ।

গাছটি কেন হঠাৎ কেটে ফেলা হলো? জানতে বারবার হল প্রভোস্ট অধ্যাপক রহমত উল্ল্যাহকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে হলের এক আবাসিক শিক্ষক ড. মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আরবরি কালচারের লোকজন নাকি গাছটি দেখে এটিকে ঝুকিপূর্ণ বলেছেন।’

এ ব্যাপারে আরবরি কালচার সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক মিহির লাল সাহার জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কিছু জানেন। গাছটি ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে দেয়া তার স্বাক্ষরিত চিঠির ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘হতে পারে, তবে অনেক দিন আগেরতো, তাই বিষয়টি আমার মনে নেই।’
>>বাংলামেইল২৪ডটকম