ব্যক্তির ক্যাডার না হয়ে দলের ক্যাডার হওয়ার জন্য কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) নগরীর মোহরায় এক শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ব্যক্তির ক্যাডার হবেন না, ক্যাডার হবেন দলের। ব্যক্তির ক্যাডার হয়ে খুনোখুনি করে আপনার পরিবার যখন আপনাকে হারাবে, দুই-চারদিন খবর নেবে, এরপর আর খবর নেবে না।
‘অমুক ভাইয়ের পক্ষ থেকে লাল গোলাপ, তমুক ভাইয়ের পক্ষ থেকে লাল গোলাপ…। আরে আমি ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক আর মন্ত্রী না থাকলে আমার নামে স্লোগান কেউ দেবে না। কেউ কারও নয়। এখানে সব কর্মী বঙ্গবন্ধুর আর শেখ হাসিনার। আর কোন ব্যক্তির নয়। ’ বলেন ওবায়দুল কাদের
নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, দল ভারী করার জন্য খারাপ লোকদের আশ্রয় দেবেন না। এটা আত্মঘাতী। দল ভারী করার জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেবেন না। দল করলে দলের নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। নিয়মশৃঙ্খলা যিনি মানবেন না তিনি যত বড় প্রভাবশালী হোন, আওয়ামী লীগ করার অধিকার তার নেই।
‘নেতা যদি পকেট ভারী করার ন্য, দল ভারী করার জন্য দলে ঢুকাবেন না। দলে ভাল লোক দরকার। চট্টগ্রামে অনেক ভাল মানুষ আছে, রাজনীতি থেকে দূরে কিছু কিছু আচরণের জন্য, খারাপ আচরণের জন্য। ’ বলেন ওবায়দুল কাদের
তিনি বলেন, এখন যেদিকেই তাকায় সৌজন্য ব্যানার, সৌজন্য পোস্টার, সৌজন্য বিলবোর্ড। সৌজন্য ব্যানার আছে, সৌজন্য পোস্টার আছে, সৌজন্য বিলবোর্ড আছে কিন্তু রাজনীতিতে সৌজন্যবোধ ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে।
‘এখন কেউ কাউকে সম্মান করে না। সিনিয়রকে জুনিয়র মানে না। মুরব্বীদের পরোয়া করে না। অসুস্থ লোকের দিকে ফিরেও তাকায় না। এটা আওয়ামী লীগের কালচার কোনদিন ছিল না। ’
হতাশ কন্ঠে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন আওয়ামী লীগে আমরা আপনেরা পর হয়ে যাচ্ছি। যখন আমার প্রয়োজন নাই, আমি অচেনা হয়ে যাচ্ছি।
সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার উন্নয়নের সঙ্গে যদি ভাল আচরণ যুক্ত করা না যায়, তাহলে ভাল রেজাল্ট পাওয়া যাবে না। মাঝে মাঝে যেসব ঘটনা ঘটে তাতে আমরা লজ্জা পাই। শেখ হাসিনার উন্নয়ন, অর্জন লজ্জা পায়। এত কাজ বাংলাদেশে, অথচ এর সঙ্গে কিছু অপকর্ম যুক্ত হয়ে এই কাজকে ম্লান করে দিচ্ছে।
এসময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা ‘কাউয়া কাউয়া’ বলে চিৎকার করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, থামো, কাউয়া তো সিলেটে বলেছি….।
‘সবাইকে বলব, অনেক হয়েছে, আর ঘরের মধ্যে ঘর তুলবেন না। আচরণ শুদ্ধ করলে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পথ কেউ রুদ্ধ করতে পারবে না। ’
প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সেকান্দর হায়াত খানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নগরীর মোহরায় মির্জা আহমেদ ইস্পাহানী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই শোকসভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
এসময় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।