ব্যালট পেপারে সিলের পরিবর্তে টিক চিহ্ন

0
104

ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর প্রতীকে সিল মারার পরিবর্তে টিক চিহ্ন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।ব্যালটkaje rakib পেপারে সিলের পরিবর্তে টিক চিহ্ন

বুধবার ইসি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিশনের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্য চার কমিশনারসহ ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে কি-না তা এখনও নিশ্চিত নয়। এখন থেকে স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে ভোট গ্রহণের ক্ষেত্রে সিলের পরিবর্তে ‘টিক চিহ্ন’ চালুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কমিশন।

এছাড়াও ২০১২ সালের দেশব্যাপী ভোটার হালনাগাদে ৭০ লক্ষাধিক নতুন ভোটারের আইডি কার্ড আগামী দুই মাসের মধ্যে দেওয়া হচ্ছে। ছবিযুক্ত হালনাগাদকৃত এই ভোটার তালিকার চূড়ান্ত প্রিন্টের (মুদ্রণ) দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সেনাবাহিনীকে।

কমিশন সভা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের জানান, ভোট গ্রহণের ক্ষেত্রে সিলের পরিবর্তে টিক চিহ্ন দিয়ে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি চালু করার চিন্তা করছে কমিশন।

তিনি বলেন, “উন্নত দেশগুলোর অনুসরণে এ পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ছোটখাটো নির্বাচনে প্রথমে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। এতে বাতিল ভোটের পরিমাণ কমে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।”

জাতীয় নির্বাচনেও এ পদ্ধতির ব্যবহার হবে কি-না এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, “জাতীয় নির্বাচন এখনও অনেক দেরি, এর আগে পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদসহ অন্যান্য নির্বাচনে চিহ্ন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, “ডিসিসির সীমানার দাগ নম্বর নিয়ে কিছু জটিলতা রয়েছে। আশা করছি রমজানে তা শেষ হবে। ঈদের পরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”

জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণে আওয়ামী লীগের দলীয় এমপিদের স্বার্থ রক্ষা হয়েছে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, “খসড়া প্রকাশের পর রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও ইউপি চেয়ারম্যানের বক্তব্য কমিশন শুনেছে। তাদের বক্তব্যকে প্রাধান্য দিয়ে সীমানা চূড়ান্ত করা হয়েছে।”

জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে প্রেসে পাঠানো হয়েছে এবং ব্যালট মুদ্রণের কাজ চলছে।”

ইসি সচিবালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক জানান, ভোটাধিকার প্রয়োগে সিলের ব্যবহারে অনেক ভোট নষ্ট হয়, বাতিল ভোটের সংখ্যা বাড়ে। স্থানীয় নির্বাচনে সিল ও টিক দুটির বিধান রাখা হবে। তবে এটি বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় সংশোধন আনতে হবে।

ইসি সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে প্রায় ১৮ হাজার ভোট বাতিল হওয়ার কারণে প্রাথমিকভাবে এই সিদ্ধা নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে সিল-প্যাডের খরচ কিছুটা লাঘব হবে বলে মনে করছে কমিশন। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমদিকে কিছু স্থানীয় নির্বাচনে এটি ব্যবহার করা হবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, আগামী দু’মাসের মধ্যে নতুন ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছ থেকে ভোটাররা পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। এছাড়া ভোটার তালিকা মুদ্রণের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সেনাবাহিনীকে। দেশের ভোটারযোগ্য নাগরিকদের ১০ বছরের জন্য স্মার্ট আইডি কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থ ছাড়ের শর্ত হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র আইনেও সংশোধনী আনা হচ্ছে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোটার বেশি হওয়ায় ৩৯২টি কেন্দ্রে ভোট নিতে অনেক সময় লেগেছে। নির্দিষ্ট সময়ের পরও ৩৭টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করতে হয়েছে। কারণ সিলে ভোট নেওয়ার কারণে এসব সমস্যা তৈরি হয়েছে। ভোটারকে ব্যালট দেওয়ার পর সিল দিতে হয়। সেই সিল দেওয়ার ক্ষেত্রে সময় নষ্ট হয়।