ভূমধ্যসাগরে ২৪ বাংলাদেশি নিহতের শঙ্কা

0
50

লিবিয়া দূতাবাসের শার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স মোজাম্মেল হক শনিবার সন্ধ্যায় তিউনিসিয়া থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে থাকা উদ্ধার বাংলাদেশিদের সাথে কথা বলে লেবার কাউন্সেলর আশরাফুল ইসলাম জানতে পেরেছেন, আরও ১৮ জন বাংলাদেশি নিখোঁজ রয়েছেন। এদের কেউই আর বেঁচে নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে।”

যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ার অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাস কাজ করছে তিউনিসিয়া থেকে।

আর যে উপকূলে নৌকা ডুবেছে, সেই জোওয়ারায় আছেন বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার কাউন্সেলর আশরাফুল ইসলাম।

এর আগে শুক্রবার ওই ঘটনায় ৬ বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিলেন মোজাম্মেল হক।

দেশান্তরী প্রায় পাঁচশ মানুষকে নিয়ে ইটালি হয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টায় লিবিয়ার জোওয়ারা শহরের কাছে ভূমধ্যসাগরে বৃহস্পতিবার নৌকা দুটি ডুবে যায়।

এর মধ্যে প্রথম যে নৌকাটি থেকে সাহায্য চেয়ে সংকেত পাঠানো হয়, তাতে প্রায় একশজন ছিলেন। আর ঘণ্টাখানেক পর ডুবে যাওয়া দ্বিতীয় নৌকায় চারশর বেশি আরোহী ছিলেন বলে বিবিসির খবর।

মোজাম্মেল জানান, ওই নৌকা দুটিতে ৭৮ জন বাংলাদেশি ছিলেন। তাদের মধ্যে ৫৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহত বাংলাদেশিদের লাশ ফিরিয়ে আনা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যে লাশগুলো উদ্ধার হয়েছে তার বেশিরভাগের অবস্থাই খুব খারাপ। এগুলোর বিষয়ে এখনও লিবিয়া কোস্টগার্ড কিছু জানায়নি।”

“ডিটেনশন সেন্টারে যে বাংলাদেশিরা আটক আছেন তাদের বিষয়ে আমরা কথা বলছি। আশা করি তাদের ছাড়িয়ে আনা সম্ভব হবে।”

দুই নৌকার যাত্রীদের মধ্যে ১৯৮ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বলে শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়। এছাড়া সাগর থেকে ৮২ জনের মৃতদেহ উদ্ধার এবং তখনও ২০০ জনের বেশি নিখোঁজের কথা বলা হয় ওই প্রতিবেদনে।

ডুবে যাওয়া নৌকা দুটির আরোহীদের মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ, পাকিস্তান, সিরিয়া ও মরক্কোর নাগরিক ছিলেন বলে রেড ক্রিসেন্টের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায় বিবিসি।

উদ্ধার করা অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে ১৪৭ জনকে ত্রিপোলির পশ্চিমে সাবরাথায় একটি ‘ডিটেনশন সেন্টারে’ নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে রয়টার্সের খবরে জানানো হয়েছে।

ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপমুখী অভিবাসনের ভয়ঙ্কর চেষ্টায় হাজারো মানুষের মৃত্যুর খবর গত দুই বছরে বহুবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম আট মাসেই সাগরে ডুবে অন্তত ২ হাজার ৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জাতিসংঘের তথ্য।

জাতিসংঘ বলছে, এই সময়ে অন্তত এক লাখ অবৈধ অভিবাসী ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইটালিতে পৌঁছাতে পেরেছেন। আরও এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ ইউরোপে ঢুকেছে গ্রিস হয়ে।

গত বুধবার লিবিয়া উপকূলে দুর্ঘটনায় পড়া একটি জাহাজের খোলে ৫১ জনের লাশ পাওয়া যায়। ওই জাহাজ থেকে চারশর বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধার করে সুইডিশ কোস্ট গার্ড। ওইদিনই ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করা হয় অন্তত তিন হাজার মানুষকে।

এর আগে গত শনিবার লিবিয়া উপকূল থেকে ৪ হাজার ৪০০ অবৈধ অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়