মন্ত্রীসভায় হঠাৎ রদবদল?

0
74
ফাইল ছবি

মন্ত্রীসভাআওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে এলজিআরডি মন্ত্রণালয় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার গুঞ্জন এবং সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকজন মন্ত্রীকে নিয়ে নানা বিতর্কের পর মন্ত্রিসভায় রদবদল নিয়েও সরকারি দলে আলোচনা শুরু হয়েছে।

শীর্ষ পর্যায়ের একটি সূত্র বলছে, শিগগিরই কয়েকজনকে বাদ দিয়ে মন্ত্রিসভায় রদবদল করা হবে। তবে বাদ দেওয়ার তালিকায় সৈয়দ আশরাফের না থাকার সম্ভাবনাই বেশি।

ওই সূত্রটি দাবি করেছে, মঙ্গলবার একনেক বৈঠকের পর মন্ত্রিসভায় রদবদলের বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হওয়ার কথা ছিলো। তবে সৈয়দ আশরাফ বৈঠকে না থাকায় শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে আর আলোচনা হয়নি।

তবে হঠাৎ আলোচনায় সৈয়দ আশরাফ প্রসঙ্গ আসলেও ভেতরের আলোচনায় আছেন অন্যরা।

ব্রাজিল থেকে ‘নিম্নমানের’ গম আমদানির পর দলের ভেতরে ও বাইরে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি উচ্চ আদালতে যাওয়ায় আরো চাপের মুখে পড়েন তিনি।

প্রথম থেকে এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী কোনো মন্তব্য না করলেও মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে তিনি এর দায় বিএনপি এবং গণমাধ্যমের ওপর চাপিয়ে বলেছেন, খালেদা জিয়া ইস্যু তৈরি করতেই ‘গম বিতর্ক’ তৈরি করেছেন। ‘আসলে ওই গম দেখতে খারাপ হলেও গুণগত মান ভালো।’

তবে আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেই এমন গম আমদানির বিষয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছে। প্রকাশ্যেই দলের একজন এমপি তার এলাকায় ওই গম ঢুকতে বাধা দেওয়ায় আরও চাপে পড়েন কামরুল ইসলাম।

মন্ত্রিসভার আরেক সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন নারায়ণগঞ্জে র‌্যাবের হাতে ৭ খুনের ঘটনার পর। ওই ঘটনার প্রধান আসামি তার জামাতা।

এক পর্যায়ে বিষয়টা হালকা হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু দুর্নীতির দায়ে নিম্ন আদালত যে সাজা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট তা বাতিল করলেও আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে বিষয়টি আবারো হাইকোর্ট বিভাগে পাঠিয়েছেন।

দুদকের আইনজীবী ওই রায়ের পর বলেন, এখন তিনি (মায়া) আর মন্ত্রী থাকতে পারবেন না। যদিও মায়ার আইনজীবী এর বিরোধিতা করে বলেছেন, আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত মন্ত্রী থাকতে বাধা নেই।

মন্ত্রিসভার আরো কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে আলোচনা আছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী ও ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ তাদের অন্যতম।

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরইমধ্যে মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। মন্ত্রিসভা থেকে কাউকে কাউকে বাদ দিতে নীতিগত সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তিনি।

মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনের আলোচনা প্রসঙ্গে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে এটা স্বাভাবিক ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছে করলেই সেটা সম্ভব। এখন দেখার বিষয় তিনি কি করেন?

তবে মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে বিতর্কের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাবেক দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হেসে জবাব দেন, এটা আপনারাই (সাংবাদিকরা) ভালো বলতে পারেন।

এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেন, রদবদল বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এটা হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

মন্ত্রিসভায় রদবদলের আগে দাপ্তরিক কাজ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।