মহানগর বিএনপির আওতাধীন অসম্পূর্ণ থাকা পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা স্থগিত

0
134

নগরীর থানা ও ওয়ার্ড বিএনপি কমিটি ঘোষণা স্থগিত করে নগর বিএনপি। দলের দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী’র একটি ফোনে নগরীর থানা ও ওয়ার্ড বিএনপি কমিটি ঘোষণা স্থগিত করে নগর বিএনপি। রুহুল কবীর রিজভী গত ২৭ আগস্ট মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনকে ফোন করে দলের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

রুহুল কবীর রিজভী’র ফোনে কথা স্বীকার করে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা নগরীর অসম্পূর্ণ থাকা থানা ও ওয়ার্ড বিএনপি কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য সভা ও সাধারণ সম্পাদক বরাবরে চিঠি দিই। চিঠি পাওয়ার পর প্রায় ৯৯ শতাংশ থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি আমাদের হাতে আসে। এর মধ্যে নগরীর ১৫ থানার মধ্যে ৫টি এবং ৪৩ ওয়ার্ডের মধ্যে ২৮টি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করি। কিন্তু ২৭ আগস্ট দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী ফোন করে চসিকের মেয়র নির্বাচনের আগে আর কোনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা না দেওয়ার জন্য বলেন। এ কারণে আমরা আর কোন কমিটি ঘোষণা করছি না।’

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একটি সূত্র জানায়, পাঁচলাইশ থানা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা নিয়ে নগর বিএনপির সিনিয়র এক নেতা কেন্দ্রের কাছে আপত্তি জানান। এ কারণে কেন্দ্র থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসে। একই অবস্থা পাহাড়তলী থানা বিএনপির কমিটির ক্ষেত্রেও। থানা বিএনপির সভাপতি পদে বহাল থেকে হাজি বাবুল হক বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ না করার অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনের পর তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিএনপির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু সম্প্রতি বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিলে তিনি বিএনপিতে স্বপদে পুনর্বহাল হওয়ার জন্য নগর বিএনপির কাছে আবেদন করেন। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র এক নেতা কেন্দ্রের কাছে আপত্তি জানান। ফলে থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা পিছিয়ে যায় বলে জানা গেছে।

বিএনপির সূত্র জানায়, গত ১৬ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত নগরীর সকল থানা ও ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে চিঠি প্রেরণ করে নগর বিএনপি। নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর স্বাক্ষরিত চিঠিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে নগর বিএনপির কাছে জমাদানের নির্দেশনা দেয়া হয়। চিঠি পেয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে মহানগর কমিটির কাছে জমা দেয়। এর মধ্যে নগরীর ১৫ থানার মধ্যে ৫টি এবং ৪৩ ওয়ার্ডের মধ্যে ২৮টি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে দলটি। অবশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার প্রাক্কালে কেন্দ্র থেকে রুহুল কবীর রিজভী’র ফোন আসলে কমিটি ঘোষণার সকল কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে নগরীর প্রত্যেক থানা ও ওয়ার্ডে বিএনপি নতুন কমিটি আংশিকভাবে ঘোষণা দেয় নগর বিএনপি।

অধিকাংশ নতুন কমিটিতে সভাপতি, সিনিয়র সহ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম ঘোষণা দেয়া হয়। ঘোষিত প্রত্যেক কমিটির নেতৃবৃন্দকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে বেশিরভাগ কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি। এজন্য ২০১৮ সালের ১৭ জুলাই নগরীর প্রত্যেক থানা ও ওয়ার্ড কমিটির কাছে চিঠি দেয় নগর বিএনপি। কিন্তু এক বছরের মধ্যে বেশিরভাগ কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি। ফলে আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনের আগে প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে সবগুলো কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে চেয়েছি দলটি। কিন্তু মেয়র নির্বাচনের আগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করলে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় কেন্দ্র থেকে এ ঘোষণা আসে বলে জানা গেছে।