মুচি নাকি ‘মুক্তিযোদ্ধা’!

0
315

মুচি নাকি মুক্তিযোদ্ধাদেশকে স্বাধীন করার জন্য তিনি জীবন বাজি রেখেছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পরেছিলেন পাকিস্তানী সেনাদের বিরুদ্ধে। দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা পেয়েছি বাংলা ভাষা। অথচ ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হয়েও কাজী আব্দুল বারিকের পরিচয় এখন ‘মুচি’! জুতা সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করছেন, কুষ্টিয়ার ৮৫ বছর বয়সী এই প্রবীণ।

বারিক থাকেন কুষ্টিয়ার মিলপাড়া রাম চৌধুরী লেইনে। পরিবারে পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলের বাবা তিনি। কিন্তু সবাই বিয়ে করে নিজ-নিজ সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তাই স্ত্রী আসমা খাতুনকে নিয়ে তার বেঁচে থাকার সংগ্রাম।

একসময় জুতার ব্যাবসা করতেন ‘মুক্তিযোদ্ধা’ বারিক। শহরের এন এস রোডের মার্কেটে তাদের দোকান ছিলো, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে মহাজনের কাছে লোন থাকায় সব হারিয়ে এখ নিঃস্ব তিনি। তারপরও মনোবল হারাননি। থালা নিয়ে রাস্তায় ভিা বৃত্তি পেশাও বেছে নেননি। বরং নিজের পায়ে দাঁড়াতে এই বৃদ্ধ বয়সেও সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি বঙ্গবন্ধু মার্কেটের বিপরীতে জুতা সেলাই করেন। তাতেই কোনও রকমে টেনে-টুনে চলছে সংসার। স্ত্রী আসমা খাতুন অসুস্থ। বড় মেয়ে মাঝে-মধ্যে দেখাশুনা করেন। তবে সবসময় নয়।

জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার কোনও সার্টিফিকেট নেই। তবে কমান্ডারের স্বাক্ষর করা একটা কাগজ আছে। সেটা দিয়েই এবার আবেদন করেছেন। স্বপ্ন দেখছেন, শেষ বয়সে যেন মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়ে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিতে পারেন।

প্রবীণ এই মুক্তিযোদ্ধা কারো সাহায্য চাননা, কারো করুণাও নয়। শুধু চান, সাদা কফিনের উপর এক টুকরো লাল-সবুজের পতাকা।