মেয়র নাছিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই দুদকের গণশুনানিতে

0
151

দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) ৬৯টি অভিযোগ জমা পড়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে। তবে মেয়র আ জ ম নাছিরের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে এসব অভিযোগের শুনানি করে দুদক। শুনানি উপলক্ষে আগ্রাবাদের সরকারি কার্যভবনসহ বিভিন্ন স্থানে ডেস্ক বসিয়ে, পোস্টার-ব্যানার টাঙিয়ে, কাগজে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অভিযোগ সংগ্রহ করে দুদক।

শুনানির আগে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম, মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. নুরুল আলম নিজামী ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, টানাটানির সংসার আমাদের সিটি করপোরেশন। একটু সদয় হতে হবে। আমি দায়িত্বগ্রহণের পর যত কাজ হয়েছে, যারা টাকা পাবে ধাপে ধাপে দিচ্ছি। আমাদের যেহেতু বাজেট স্বল্পতা রয়েছে, তাই সব দিক ম্যানেজ করে কাজ করতে হয়।

তিনি বলেন, ৭০ লাখ মানুষের এ নগরে সমস্যা থাকবেই। সমস্যা সমাধানের উপায় আছে। ঢালাও অভিযোগ না করে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে আসতে হবে।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মিনু আকতারের অভিযোগ ছিল বস্তিবাসীদের ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা বলে ৩৩ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়, নেওয়া হয় ১০ টাকা করে। ১২ কাঠা জমিতে ৭তলা ভবন হলেও সেখানে এখন চসিকের কার্যালয় করা হয়েছে।

এর জবাবে মেয়র বলেন, নগরে ১৪ লাখ বস্তিবাসী। তাদের বাসস্থান নিশ্চিতের দায়িত্ব চসিকের নয়। সাবেক মেয়র বস্তিবাসীদের ফ্ল্যাট দেওয়ার ঘোষণা কেন দিয়েছেন সেটি বোধগম্য নয়। আন্দরকিল্লায় নগর ভবন হয়ে গেলে সেখানে চসিক কার্যালয় স্থানান্তর হবে। এরপর বস্তিবাসীর কাছে বরাদ্দ দেওয়া হবে কিনা বিবেচনা করা হবে।

চান্দগাঁও এলাকার প্রবাসী জহির আহমদ অভিযোগ করেন ২০১৫ সালে পাঁচতলা ভবনের জন্য গৃহকর নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮৭৭ টাকা। কর আদায়কারীকে সব টাকা দেওয়ার পর রশিদ দেওয়া হয় ৫৫ হাজার ৯৫২ টাকা। বাকি টাকার হিসাব নেই! চার বছর ধন্না দিয়েও সমাধান পাননি।

আবদুল মতিন নামের এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন চসিকের লেকসিটি প্রকল্পে প্লটের জন্য তার কাছ থেকে ৩৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন চসিক কর কর্মকর্তা জানে আলম। দুই মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে চসিককে ব্যবস্থা নিতে বলেন দুদক কমিশনার।

একজন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ওয়ে ব্রিজ স্থাপনের কাজ চাচাত ভাইকে দেওয়ার অভিযোগ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে জ্যেষ্ঠতা লংঘন করে পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগ করেন তিন সহকর্মী।

এসব বিষয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

জাকির হোসেন সিটি করপোরেশন হোমিওপ্যাথিক কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, লালখান বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এএফ কবির আহমেদ মানিকের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক দোকান নির্মাণ, রেলওয়ের জায়গা দখলের অভিযোগ করেন সালামত মিয়া।

একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের অভিযোগ ছিল বকেয়া গ্র্যাচুইটির অর্থছাড়ে বিলম্ব, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবছার উদ্দিনের অভিযোগ ছিল সরকারি নালা দখল করে এক ভূমিদস্যু ৫ তলা ভবন নির্মাণের কারণে জলাবদ্ধতা হচ্ছে। চসিকের অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজনের লিখিত অভিযোগ ছিল তালাকনামার কোর্ট ফি ২৫ টাকা হলেও পেশকার ১-২ হাজার টাকা চেয়ে বসেন। আরেকজনের অভিযোগ ছিল, আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের ডোর-টু-ডোর শ্রমিক মাহবুবুল আলম জাল সনদে ঘুষ দিয়ে চাকরি নিয়েছেন।

অভিযোগ ছিল পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কার্যক্রম, রাজস্ব বিভাগের বিরুদ্ধে ট্রেড লাইসেন্সে অতিরিক্ত টাকা আদায়, হয়রানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে