যেকোনো মূল্যে কর্ণফুলী ও হালদা বাঁচানোর তাগিদ

0
101

কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে জাতীয় অর্থনীতির সম্পর্ক। হালদা নদী উপমহাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র। এ দুই নদী থেকে চট্টগ্রাম ওয়াসা পানি উত্তোলন করে পরিশোধনের মাধ্যমে নগরের প্রায় ৭০ লাখ মানুষের কাছে সরবরাহ করে। তাই পানির উৎস সংরক্ষণে যেকোনো মূল্যেই এ দুই নদীকে বাঁচাতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগরের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কনফারেন্স হলে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) উদ্যোগ এবং জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (এফএও) সহায়তায় ‘ডেভলপিং দ্যা ড্রাফট ওয়াটারশেড ম্যানেজমেন্ট পলিসি অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন ফ্রেমওয়ার্ক’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন আইইউসিএন এর কান্ট্রি প্রতিনিধি রাকিবুল আমিন। বক্তব্য দেন চবির বন ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল হোসেন, ড. এস এম শামসুল হুদা, ড. জেরিন আকতার ও আবদুল্লাহ আল মামুন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া।

বক্তব্য দেন সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন মুন্না ও ড. ওয়াহিদুল আলম, ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক ড. এম আতিকুর রহমান ও ইকবাল সরওয়ার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজা এ মল্লিক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শীবেন্দু খাস্তগীর ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সাফাত হোসেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক জমির উদ্দিন, বিএফআরআই এর ড. রফিকুল হায়দার, জেলা বন কর্মকর্তা গোলাম মওলা ও বন কর্মকর্তা ইসমত আরা নুর, ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রউফ প্রমুখ।

চবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীকে বাঁচিয়ে রেখেছে জোয়ার-ভাটা এবং শাখা খালগুলো। অন্যথায় কর্ণফুলী নদী একটি লেকে পরিণত হতো। কারণ প্রতিদিন যে হারে গৃহ, আবাসিক, শিল্পবর্জ্য এবং অপচনশীল প্লাস্টিক ফেলা হচ্ছে তাতে কর্ণফুলী নদীর প্রাণ এখন ওষ্ঠাগত। তাই যে কোনো মূল্যে কর্ণফুলী নদীকে বাঁচানোর কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, ‘হালদা নদীকেও বঁচাতে হবে প্রাকৃতিক মৎস্যপ্রজনন ক্ষেত্র সমৃদ্ধির স্বার্থে। মুজিববর্ষকে সামনে রেখে হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হ্যারিটেজ’ ঘোষণা করা হবে। আমরা আশা করছি, হ্যারিটেজ ঘোষণার পর হালদা নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় কার্যকর সব উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসাইন বলেন, ‘প্রতিটি নদীর চরিত্র, বৈশিষ্ট্য, অবস্থান ও প্রকৃতি ভিন্ন ভিন্ন। তাই নদীগুলোকে বাঁচাতে এবং পানির উৎসগুলো সংরক্ষণ করতে তৃণমূল পর্যায়ের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ, জনপ্রতিনিধি এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সবাইকে সচেতনভাবে কাজ করতে হবে। নদী বাঁচাতে সমন্বিত উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই।’