যেভাবে করতে হবে স্কুল ভর্তির আবেদন

0
286

 

নগরীর ৯টি সরকারি স্কুলে ৫ম থেকে ৮ম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২১, ২৩ ও ২৬ ডিসেম্বর। ৯টি স্কুলকে এবার তিনটি ক্লাস্টারে (গ্রুপে) বিভক্ত করায় ভর্তি পরীক্ষাও নিতে হচ্ছে তিন দিনে। এদিকে, আগামীকাল (৩০ নভেম্বর) রাত ১২টা থেকে শুরু হচ্ছে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া। শিক্ষার্থীদের (http://www.gsa/teletalk.com.bd) এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। আগামী ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা।

গতবার এক আবেদনে ক্রমান্বয়ে সবকয়টি স্কুল পছন্দের সুযোগ থাকলেও এবার একটি আবেদনে একটি মাত্র স্কুল পছন্দ করা যাবে। সেক্ষেত্রে তিনটি ক্লাস্টারে পরীক্ষায় অংশ নিতে হলে আলাদা ভাবে তিন বার আবেদন করতে হবে। একই ভাবে দুটি ক্লাস্টারে পরীক্ষায় বসতে দুই বার আবেদন করতে হবে। আবার একই স্কুলে দুইবারও আবেদন করা যাবে না। একটি ক্লাস্টার (গ্রুপ) থেকে শুধু একটি স্কুল পছন্দ দিয়েই আবেদন করতে হবে শিক্ষার্থীদের। এদিকে, পদ্ধতি পরিবর্তন হলেও ফি’র অংক অভিন্নই থাকছে। অর্থাৎ গতবারের ন্যায় প্রতি আবেদন বাবদ দেড়শ (১৫০) টাকা ফি দিতে হবে ভর্তিচ্ছুদের। আর এ ফি পরিশোধ করতে হবে অনলাইনেই। গতবার ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নেয়া হলেও এবার টেলিটকের মাধ্যমেই এ ফি পরিশোধ করতে হবে ভর্তিচ্ছুদের। এছাড়া গতবার পরীক্ষার আগে বিভিন্ন কোটার আবেদন যাচাইবাছাই করা হলেও এবার যাচাই করা হবে ফলাফলের পর। মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হলে কোটায় আবেদন করা পরীক্ষার্থীকে ফলাফল প্রকাশের পরদিনই কোটার স্বপক্ষে যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ সংশ্লিষ্ট স্কুলে উপস্থিত হতে হবে। সেখানে জেলাপ্রশাসনের প্রতিনিধি ও শিক্ষক প্রতিনিধিগণ কোটার ডকুমেন্ট যাচাইবাছাই করবেন। আর শিফটের বিষয়ে মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া বিজোড় সংখ্যার রোল নম্বরধারীরা মর্নিং শিফট এবং জোড় সংখ্যার রোল নম্বরধারীরা সংশ্লিষ্ট স্কুলে ডে শিফটে ভর্তির সুযোগ পাবে।

সরকারি স্কুলের ভর্তি পরীক্ষা তদারকের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান এসব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তবে বিগত বছরগুলোতে ফলাফল প্রকাশের নির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা করা হলেও এবার তা করেনি জেলাপ্রশাসন। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিনের অভিমতদ্রুত ফলাফল প্রকাশে আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে। কিন্তু বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীর খাতা মূল্যায়ন ও ফলাফল প্রকাশ সময় সাপেক্ষ। খুব সতর্কতার সাথে এ কাজ করতে হয়। তাড়াহুড়ো করতে গেলেও ভুলের শংকা থেকে যায়। আমরা নির্ভুল ভাবে ফলাফল প্রকাশ করতে চাই। যাতে কারো অভিযোগ না থাকে এবং কারো যেনো ভোগান্তি পোহাতে না হয়। মূলত এই কারণে আমরা ফলাফল প্রকাশের সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করছি না।

প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন ও সময় : ৫ম থেকে ৮ম শ্রেণির প্রতিটি শ্রেণিতে মোট একশ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে বাংলা৩০, ইংরেজি৩০ এবং গণিত বিষয়ে ৪০ নম্বরের উত্তর করতে হবে শিক্ষার্থীদের। আর একশ নম্বরের পরীক্ষার জন্য ২ ঘণ্টা সময় পাবে শিক্ষার্থীরা।

কোটা : মাউশি কর্তৃক জারিকৃত সরকারি স্কুলে ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ীভর্তির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ থাকবে।

আর ২ শতাংশ প্রতিবন্ধী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কর্মকর্তাকর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হবে।

এছাড়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির মোট আসনের ১০ শতাংশ কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

আবেদন ফরম পূরণ ও ফি জমাদানের নিয়ম : অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ ও ফি জমা দান কার্যক্রম শুরু হবে ৩০ নভেম্বর থেকে। চলবে ১২ ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত।
http://gsa.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটে আবেদনপত্র পূরণ ও টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বর থেকে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন ফি জমা দিতে হবে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আবেদন পত্র জমা দেয়ার পরে ইউজার আইডি পাবেন। প্রাপ্ত ইউজার আইডি ব্যবহার করে টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বর থেকে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন ফি জমা দিতে পারবেন। শুধুমাত্র আবেদন জমা দেয়ার শেষ তারিখের মধ্যে (১২ ডিসেম্বর, রাত ১২টা) ইউজার আইডি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে (১৪ ডিসেম্বর, বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত) ফি জমা দেওয়ার সুযোগ পাবেন।

আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে যেভাবে :

http://gsa.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটে ব্রাউজ করে আবেদন ফরম পূরণ ও জমা দিতে হবে ভর্তিচ্ছুদের। অনলাইন আবেদনের নির্দেশনা মতে শিক্ষার্থীকে তার সব তথ্য পূরণ করতে হবে। যে সব শিক্ষার্থী বিভিন্ন কোটায় আবেদন করবেন তাদের কোটার বিষয়টি অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। অন্যথায় কোটা বিবেচনা করা হবে না।

অনলাইন আবেদনপত্রে শিক্ষার্থী তার রঙিন ছবি (দৈর্ঘ্য : ৩০০ প্রস্থ: ৩০০ পিক্সেল) স্ক্যান করেJEPG ফরমেটে নির্ধারিত স্থানে আপলোড করতে হবে। অনলাইনে আবেদনপত্র যথাযথভাবে পূরণ করে নির্দেশনা মতে জমা দেয়ার পরে কম্পিউটারে ছবিসহ আবেদনপত্রের প্রিভিউ দেখা যাবে। নির্ভুলভাবে আবেদন জমা দেয়া হলে শিক্ষার্থী একটি ইউজার আইডিসহ ছবিযুক্ত আবেদনপত্রের একটি কপি পাবেন।

অনলাইনে পূরণকৃত আবেদনপত্রের একটি প্রিন্ট অথবা ডাউনলোড কপি শিক্ষার্থীকে সংরক্ষণ করতে হবে। এটি পরীক্ষা সংক্রান্ত যে কোনো কাজে লাগবে।

ফি জমা দিতে হবে যেভাবে : শিক্ষার্থীকে ফি জমা দেয়ার জন্য ইউজার আইডি নম্বর ব্যবহার করে টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বর থেকে দু’টি এসএমএস পাঠাতে হবে। প্রতিটি আবেদনের জন্য ফি বাবদ ১৫০টাকা সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জমা দিতে হবে। প্রথম এসএমএস : GSA একটি স্পেস এরপর ইউজার আইডি (ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন হতে প্রাপ্ত) লিখে সেন্ড করতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। ফিরতি এসএমএসে শিক্ষার্থীর নামসহ একটি পিন নম্বর পাওয়া যাবে। যা ব্যবহার করে দ্বিতীয় এসএমএসটি করতে হবে। দ্বিতীয় এসএমএস : GSA একটি স্পেস YES একটি স্পেস এরপর প্রথম এসএমএস থেকে পাওয়া পিন নম্বরটি লিখে সেন্ড করতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। সফলভাবে আবেদন ও ফি জমা দেয়া হলে দ্বিতীয় এসএমএস থেকে পাওয়া ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে http://gsa.teletalk.com.bd ওয়েবসাইট থেকে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে। শিক্ষার্থীকে এই প্রবেশপত্রটি লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং ভর্তির জন্য অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।

উল্লেখ্য, অনলাইন আবেদন ফরমের সব অংশ পূরণ করে জমা দেয়া হলেও ফি জমা না দেয়ার আগ পর্যন্ত অনলাইন আবেদনপত্র গৃহীত হবে না এবং প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম সম্পাদন এবং এ সংক্রান্ত তথ্যউপাত্ত সংগ্রহের জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজেদেরই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার আহবান জানানো হয়েছে মাউশি’র পক্ষ থেকে। এছাড়া অনলাইন আবেদন ফরমে প্রার্থীর প্রদত্ত মোবাইল নম্বরটিতে ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় যোগাযোগ সম্পন্ন করা হবে বিধায় মোবাইল নম্বরটি (অনলাইন আবেদনে দেওয়া) সার্বক্ষণিক সচল রাখতে হবে। আর এতে এসএমএসএর মাধ্যমে কোন নির্দেশনা আসলে তা তাৎক্ষণিকভাবে অনুসরণ করতে হবে।

জেলাপ্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী৯টি সরকারি স্কুলকে এবার ক, খ ও গ এই তিনটি ক্লাস্টারে (গ্রুপে) বিভক্ত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, নগরীর ৯টি সরকারি স্কুলে চার শ্রেণিতে (৫ম থেকে ৮ম) মোট ২ হাজার ৮৮৩টি শূন্য আসনের বিপরীতে এ ভর্তি যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে শিক্ষার্থীরা। তবে নবম শ্রেণির ৭৫০টি সহ স্কুলগুলোতে এবার মোট শূন্য আসন সংখ্যা ৩ হাজার ৬৩৩টি। এর মধ্যে ৫ম শ্রেণিতে ১ হাজার ৯৬০টি, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৬৩৮, সপ্তমে ৮০, অষ্টমে ২০৫ এবং নবম শ্রেণিতে ৭৫০টি আসনে ভর্তির সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা। অবশ্য, জেএসসি/জেডিসি’র ফলাফলের ভিত্তিতে নবম শ্রেণিতে ভর্তির নিয়ম রয়েছে। ফলে এ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য কোন পরীক্ষা নেয়া হবে না।