যেমন আছেন সাবেক মন্ত্রীরা

0
69

মহাজোট সরকারে আগের মন্ত্রিসভায় তারা ছিলেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। বর্তমান মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি তাদের। কেউ দলের দায়িত্ব পালন করছেন। কেউ বা একেবারে অবসর সময় কাটাচ্ছেন। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর গঠিত ৪৯ সদস্যের মন্ত্রিসভায় ২৪ জনই নতুন মুখ। পুরনো মন্ত্রীদের ৩৬ জনের স্থান হয়নি মন্ত্রিসভায়। বাদ পড়াদের অনেকে এমপি হয়েছেন দশম সংসদে। সংসদ আর দলীয় কাজে তারা ব্যস্ত। কেউ মন দিয়েছেন ব্যবসায়। কারও বা ব্যস্ততা পরিবার ঘিরে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর সরকারের মধ্য সময়ে দায়িত্ব পেয়েছিলেন এ মন্ত্রণালয়ের। যতদিন মন্ত্রীর পদে ছিলেন আলোচনা-সমালোচনা পিছু ছাড়েনি তার। সাভারের আলোচিত রানা প্লাজা ভবন ধসের পর তার দেয়া ঝাঁকুনি তত্ত্ব নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয় চারদিকে। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে চাঁদপুর জেলার একটি আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এবার আর মন্ত্রীর পদ পাননি। ইতিমধ্যে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে উপদেষ্টা পরিষদে। দলীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কার্যালয়ে খুব একটা যান না তিনি। দলীয় কর্মসূচিতেও তাকে খুব একটা দেখা যায় না। নিজের নির্বাচনী এলাকায়ও এখন আর সময় দেন না আগের মতো। বেসরকারি ফার্মার্স ব্যাংক পরিচালনার সঙ্গে আছেন তিনি। এখন তার বেশি সময় কাটে ওই ব্যাংকেই। এছাড়া, বনানীর ২৫ নম্বর সড়কের ১৬ নম্বর বাসায় বেশির ভাগ সময় কাটান সাবেক প্রভাবশালী এই মন্ত্রী। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর থেকে মনোযোগ দিয়েছেন নিজের ব্যবসায়। ব্যবসা ঘিরেই এখন তিনি সময় কাটান। তবে এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন নিয়মিত। পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠার পর মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। এরপর বিচ্ছিন্ন হন দল থেকেও। বিগত নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হয়নি দল থেকে। নির্বাচনের পর থেকে রাজনীতি থেকেই বিচ্ছিন্ন অনেকটা। সময় দিচ্ছেন নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। সমপ্রতি বৃহৎ কলেবরের একটি বই প্রকাশ করেছেন সৈয়দ আবুল হোসেনের জবাবদিহি নামে। এই বইতে তিনি পদ্মা সেতু সংক্রান্ত সব প্রশ্ন ও মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালনের বিশদ তুলে ধরেছেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট সাহারা খাতুন। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর মহাজোট সরকারের সময়ে হয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ‘তালাতত্ত্ব’র জন্য সমালোচিত ছিলেন তিনি। ব্যর্থতার জন্য তাকে মন্ত্রণালয় বদল করে দায়িত্ব দেয়া হয় ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে ঢাকার একটি আসন থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য হয়েছেন সাহারা খাতুন। নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হলেও এবার সেই মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়নি তার। নিজের নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও আওয়ামী লীগের ধানমন্ডিস্থ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় ও বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খুব একটা আসেন না তিনি। সাহারা খাতুন সুপ্রিম কোর্টে ফিরে গেছেন তার পুরনো আইন পেশাতেই। সরকারি বাসা ছেড়ে থাকছেন উত্তরার বাসায়। আইন পেশা ঘিরে তিনি এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
মহাজোট সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন ডা. দীপু মনি। অনেকটা চমকে দিয়েই দেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন
। নিজের দায়িত্ব পালনকালে রেকর্ড গড়েছেন বিদেশ ভ্রমণের। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারও সংসদ সদস্য হয়েছেন তিনি। তবে আর মন্ত্রিত্ব পাননি। মন্ত্রিত্বকালে থাকতেন ইস্কাটন গার্ডেন রোডস্থ ৩৭ নম্বর পররাষ্ট্র ভবনের সরকারি বাসায়। এখন বাস করছেন ধানমন্ডিতে। দায়িত্ব পালন করছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। মাঝে মাঝে দলীয় কার্যালয়ে তাকে দেখা যায়। দলের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি ও নির্বাচনী এলাকায় দলীয় কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নেন তিনি।
সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সমালোচিত হয়েছিলেন রেলের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায়। এ ঘটনার জের ধরে মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল তাকে। প্রথম বারের মতো মন্ত্রী হওয়া অভিজ্ঞ এ সংসদ সদস্য দশম সংসদেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হয়েছেন। তবে মন্ত্রিত্ব পাননি। তার সময় কাটে সংসদ আর বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে। মাঝে মধ্যে যান নিজ নির্বাচনী এলাকায়। আওয়ামী লীগ ঘরানার বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের অনুষ্ঠানে তাকে নিয়মিত দেখা যায় অতিথি হিসেবে।
২০০৯ সালে গঠিত মহাজোট সরকারের প্রথম ভাগে বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন গোপালগঞ্জ-১ আসন থেকে নির্বাচিত কর্নেল (অব.) ফারুক খান। দেশবাসীকে ‘কম খাওয়ার’ উপদেশ ও অতিকথনের জন্য সমালোচিত এই মন্ত্রীকে দপ্তর পরিবর্তন করে দায়িত্ব দেয়া হয় বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে আবারও জয়লাভ করলেও মন্ত্রীর পদ পাননি তিনি। এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। যদিও দলীয় কর্মকা-ে তিনি তেমনটা সরব না। সংসদ আর বাসা ঘিরে সময় কাটান তিনি। নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের সময় দেন নিয়মিত। সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এয়ার মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার নয়া মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। এখন তার সময় কাটে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে। মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর দলীয় কর্মকা-ে সরব নন, তবে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কর্মকা-ে তার সরব উপস্থিতি রয়েছে। সাবেক এ মন্ত্রী আত্মজীবনী লিখছেন বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে।
এমপি না হয়েও মন্ত্রী হয়েছিলেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে। সজ্জন ও সৎ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি রয়েছে সাবেক এই আইনমন্ত্রীর। মন্ত্রী পদে থাকাকালীন সময়ে তার নামে কোন অভিযোগ ছিল না। তবে আওয়ামী ঘরানার লোক হলেও দলে তার কোন পদ-পদবি নেই। ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অংশ নেননি। মন্ত্রী হওয়ার আগেও দলীয় কার্যালয়ে যেতেন না। এখনও যান না। তিনি এখন পুরোদস্তুর আইন পেশায় ব্যস্ত।
মহাজোট সরকারের মেয়াদে সরকারের খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক। ব্যক্তি হিসেবে সজ্জন ও মিষ্টভাষী হিসেবে পরিচিতি থাকলেও মন্ত্রিত্ব থাকাকালে ঘনিষ্ঠজনদের দুর্নীতির কারণে সমালোচনায় পড়েন তিনি। মন্ত্রিত্ব হারানোর পর তার অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দলীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ কোন উপলক্ষ না থাকলে কার্যালয়ে আসা হয় না তার। ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টাঙ্গাইল (মধুপুর- ধনবাড়ি) এলাকা থেকে সংসদ সদস্য হলেও মন্ত্রীর পদ পাননি। পারিবারিকভাবে তিনি এখন সময় কাটাচ্ছেন বেশি।
একই সরকারের সময়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ডা. আ ফ ম রুহুল হক। দলে তার কেন্দ্রীয় কোন পদ-পদবি না থাকলেও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)-এর সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডের নজর কাড়তে সক্ষম হন তিনি। তবে দায়িত্ব পালনের সময় নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। এ কারণে মন্ত্রিত্ব পাননি দ্বিতীয় দফায়। নির্বাচনের পর থেকে দলীয় কর্মকা-ে তিনি অনেকটাই নীরব। খুব একটা যান না এলাকায়। সময় কাটছে নিজের প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে।
সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস। একসময়ের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লতিফ বিশ্বাস মন্ত্রী থাকাকালে নানামুখী বিতর্কে জড়িয়ে ফেলেন নিজেকে। স্ত্রীকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান করা, মিরপুরে বিশাল জায়গাজুড়ে বাড়ি নির্মাণ, পানিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে ঘুষ দাবি, নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জন করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পাননি। ইতিমধ্যে হারিয়েছেন সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ। দলের নীতিনির্ধারণী ও বর্ধিত সভায়ও তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় না। একসময়ের প্রভাবশালী, ব্যস্ত এই সাবেক মন্ত্রী এখন অনেকটা নীরবেই সময় কাটাচ্ছেন।
মহাজোট সরকারের সময়ের প্রথম দিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের বর্তমান প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। পরে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে। আবারো চট্টগ্রামের একটি আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ। কিন্তু এবার মন্ত্রী হতে পারেননি। এ নিয়ে হতাশ নন তিনি। দলে সরব আছেন। শুধু তাই নয়, দলের হাইকমান্ডের নজর পেতে বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষের সামলোচনায় সরব থাকেন। নিয়মিত যাতায়াত করেন নির্বাচনী এলাকায়ও।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়ুয়া। ২০০৯ সালের মহাজোট সরকারের গঠিত মন্ত্রিসভায় নাম লিখিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। জীবনে প্রথমবারের মতো টেকনোক্র্যাট কোটায় শিল্পমন্ত্রীর পদ বাগিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী হওয়ার পরেই বাম থেকে পুরোদস্তুর ভোগবাদী বনে যান দিলীপ বড়ুয়া। অভিযোগ ছিল দিলীপ বড়ুয়া শিল্পমন্ত্রী থাকাকালে শিল্পের কোন বিকাশ না হলেও নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবন যাপনে উন্নয়ন ঘটিয়েছেন তিনি। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর হতাশ দিলীপ বড়ুয়া আবারও আশায় ছিলেন মন্ত্রিত্বের জন্য ডাক পড়বে। কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি পড়েছে। এখন দিন কাটছে একাকী। এড়িয়ে চলেন আপনজনদেরও। দলেও কোণঠাসা। ইতিমধ্যে দুদকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা হয়েছে।
মহাজোট সরকারের সময়ে প্রথমে বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও পরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের আগে এরশাদের কথায় নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছিলেন তিনি। একারণে এমপিও হতে পারেননি জিএম কাদের। দলের কোন্দলের শিকার এ নেতা এখন অনেকটা আড়ালেই সময় কাটাচ্ছেন। নিজ নির্বাচনী এলাকায়ও যান না খুব একটা। পারিবারিকভাবেই তিনি এখন বেশি সময় কাটান। মহাজোট সরকারের প্রথমে ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও পরে শ্রম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন নরসিংদীর রায়পুরা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু। মন্ত্রিত্ব থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। নিজের জেলা নরসিংদীর সাবেক জনপ্রিয় মেয়র লোকমান হত্যাকা-ের পর বিতর্কে জড়ান তিনি। এ নিয়ে নিজের এলাকাতে কোণঠাসা ছিলেন। নিজের নির্বাচনী এলাকায় অনিয়মিত যাতায়াত তার। শারীরিকভাবে নানা সমস্যায় ভুগছেন তিনি। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শামসুল হক টুকু পদ হারানোর পর দলীয় কাজে তৎপর নন। আইন পেশা ও পারিবারিক কাজে তিনি এখন ব্যস্ত সময় কাটান। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট আবদুল মান্নান খান। ঢাকার অদূরে দোহার ও নবাবগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সাবেক এই বাম রাজনীতিকের ব্যক্তিগত সততার সুনাম ছিল। কিন্তু মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে বিতর্ক ঘুরপাক খায় তাকে ঘিরে। বিতর্কের কারণে সংসদ সদস্য হতে পারেননি নির্বাচন করেও। দলের দপ্তরের পদটি হারিয়েছেন তিনি। এখন পরিবার নিয়েই ব্যস্ত এ নেতা। ২০০৯ সালের মহাজোট সরকারের সময়কালের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন আহাদ আলী সরকার। বয়সের ভারে ন্যুব্জ আহাদ আলী সরকার বর্তমানে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে সক্রিয় নন খুব একটা। মাসে ২-৩ দিন নাটোরের জেলেপাড়ার বাসায় যান তিনি। এছাড়া, বেশির ভাগ সময় কাটে ঢাকাতেই।
একই সরকারের সময়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। মন্ত্রিসভায় না থাকলেও তিনি দলীয় কর্মকা-ে সক্রিয়। এই সরকারের মেয়াদে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন এডভোকেট মাহবুবুর রহমান। পটুয়াখালীর একটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে এ দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। দায়িত্ব ছাড়ার পর তার বিরুদ্ধে উঠেছে ব্যাপক অভিযোগ। দলীয় কর্মকা-ে তিনি খুব একটা সরব না। সাবেক ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা ইতিমধ্যে তার ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন ভবিষ্যতে আর নির্বাচন করবেন না। এখন তিনি ব্যস্ত ছেলেকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ বার্ধক্যের কারণে হাল ছেড়ে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে নির্বাচন করবেন এমন সম্ভাবনা নেই। তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ মন্ত্রীর পদ হারানোর পর থেকেই অনেকটা নীরবেই সময় কাটাচ্ছেন। সূত্র-মানবজমিন