রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত সর্বকালের সর্বজনীন কবি

0
78

উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত স্মরণ অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক প্রকাশ দাশ বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এবং সুকান্তকে আমরা যতই ভাবের বিচরণে রোমান্টিকতায় আচ্ছন্ন করি না কেন, তিন কবিই শেকল ভাঙার বাণী তাদের সাহিত্যে ধারণ করেছেন।

তিনি বলেন, তিন কবিই বার্তা দিয়েছেন, শোষিত মানুষের জাগরণই পারে শোষকের ভিত কাঁপিয়ে দিতে। সম্মিলিত মানুষের একতাবদ্ধ শক্তিই শোষকের বুকে কাঁপন ধরাতে পারে।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উদীচীর বার্ষিক এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি ডা. চন্দন দাশ। সঞ্চালনা করেন উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা শীলা দাশ গুপ্তা। তিন কবির রচিত গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। উদীচী প্রতিবছর চট্টগ্রামে বড় পরিসরে এ আয়োজন করলেও এবার বন্যার্তদের জন্য সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান করেছে। বড় পরিসরের আয়োজন সংক্ষিপ্ত করে সেই অর্থ বিতরণ করা হয়েছে বন্যার্তদের মাঝে।

প্রকাশ দাশ বলেন, শোষকের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার ভাষা আমরা পাই রবীন্দ্রনাথের নাটকে, নজরুলের কবিতায়। সুকান্তের কবিতা কি তার চেয়ে ব্যতিক্রম? না। নজরুলকে খণ্ডিত করার চেষ্টার জবাব নজরুল নিজেই দিয়ে গেছেন তার সাহিত্যে। রবীন্দ্রনাথ আর সুকান্ত, নজরুল উনারা সর্বকালের সর্বজনীন কবি।

উদীচী কার্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রকাশ দাশ বলেন, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-সুকান্ত সত্য ও সুন্দরের সাধক। বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণের সূচনা হয়েছিল যে রবীন্দ্রনাথের হাত ধরে পরবর্তীকালের সৃষ্ট সাহিত্য তাকে ধারণ করেই হয়েছে। অপশক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তির সংহত হওয়ার বার্তা এসেছে যুগ যুগ ধরে, যার উদাত্ত উচ্চারণের সূচনা হয়ছিল রবীন্দ্র সাহিত্যে।

তিনি বলেন, আজ ধর্ম নিয়ে এত যে হানাহানি তার বিরুদ্ধে কথা তিন কবির সাহিত্যে ছিল। ধর্ম মানুষকে শোষণের হাতিয়ার। তিন কবি চেখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেছেন ধর্ম, পুঁজি এবং সাম্রাজ্যবাদী শোষণের নগ্নরূপ। উদার মানবতাবাদের জয়গান গেয়েছেন এই তিন কবি। শোষণ আর সাম্রাজ্যবাদের উৎপীড়নের এই সময়ে তিন কবির সৃষ্ট সাহিত্য এখনো প্রাসঙ্গিক।