রমজানের পূর্বে নগরীতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করুন

0
60

সিটি মেয়র নাছিরের সাথে ক্যাব চট্টগ্রামের মতবিনিময় সভা
আগামী রমজানের পূর্বে নগরীতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ভেজাল প্রতিরোধ ও নাগরিক ভোগান্তি লাগবে সিটিকর্পোরেশন অভিযান পরিচালনা করবে
আগামি পবিত্র রমজানের পূর্বে চট্টগ্রাম সিটিকর্পোরেশন এলাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের বাজার স্থিতিশীল, বাজারগুলি তদারকির আওতায় আনা, খাদ্যে ভেজাল, নকল, মাছ, মাংশ ও ফলমুলে ফরমালিনসহ বিভিন্ন ক্যামিকেল মিশ্রণরোধে ভ্রাম্যমান মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণ ও ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষনে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সিটিকর্পোরেশন সচিবকে প্রধান করে সার্বক্ষনিক মনিটরিং কমিটি, সিটিকর্পোরেশনের আওতাধীন ১৭টি বাজারে ওর্য়াড কাউন্সিলর, চেম্বার, বাজার সমিতি, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধি, ক্যাব, সাংবাদিক প্রতিনিধি সমন্বয়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে। এছাড়াও সিটি কর্পোরেশনের নাগরিক ও ভোক্তা স্বার্থ সংস্লিষ্ঠ কমিটিতে ক্যাব প্রতিনিধি অর্ন্তভুক্ত করা, নাগরিক ও ভোক্তা স্বার্থ নিয়ে গণশুণানীর আয়োজন করা, ভোক্তাদের সচেতন করার জন্য ক্যাব ও সিটিকর্পোরেশন যৌথ ভাবে বিভিন্ন কর্মসুচি গ্রহন করার ঘোষনা প্রদান করেন চট্টগ্রাম সিটিকর্পোরেশনের মেয়র আজম নাছির উদ্দীন। ৩ মে নগরীর সিটি কর্পোরেশন মিলনায়তনে আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে চট্টগ্রাম সিটিকর্পোরেশন এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা, বাজারগুলি তদারকি, খাদ্য ও পণ্যে নকল, ভেজাল রোধ, পবিত্র রমজানে ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত, ফলমুল ও সবজিতে বিভিন্ন ক্যামিকেল মিশ্রণরোধ, রমজানে ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষনে করনীয় নিয়ে সিটিকর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আজম নাছির উদ্দীনের সাথে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটির অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সিটি মেয়র উপরোক্ত ঘোষনা প্রদান করেন।

ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী পবিত্র রজমান উপলক্ষে সিটি মেয়রের হাতে ১৬ দফা প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। সভায় সিটি মেয়র আজম নাচির উদ্দীন, ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, সিটিকর্পোরেশন সচিব আবুল হোসেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছাবের আহমদ, আবিদা আজাদ, মনোয়ারা বেগম মনি, জেসমিন পারভীন জেসি, ক্যাব মহানগর সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব নেতা হাজী আবু তাহের, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহেনা আকতার, সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা আকতার চৌধুরী, জানে আলম, হারুন গফুর ভুঈয়া, জান্নাতুল ফেরদৌস, মোনায়েম বাপ্পি, শাহীন চৌধুরী, অঞ্চল চৌধুরী, লকিয়ত উল্লাহ, মিলি চৌধুরী, জাহাঙ্গীর মোস্তফা, শাহনি আকতার বিউটি, ফারহানা আকতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দীন বক্তব্যের শুরুতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের বাজার তদারকি ও খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সিটিকর্পোরেশন প্রশাসনকে নির্দেশনা প্রদান করেন। একই সাথে নাগরিক ভোগান্তি বিশেষ করে বজ্য ব্যবস্থাপনা, জলাবদ্ধতা ও হকার্স মুক্ত করতে ইতিমধ্যে গৃহিত কর্মসুচির বৃত্তান্ত উপস্থাপন করে এ সমস্ত কাজে ক্যাব নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেন।

সভায় ক্যাব ক্যাব কর্তৃক উপস্থাপিত ১৬ দফা প্রস্তাবনার মধ্যে আছে, নগরীতে ভেজালমুক্ত খাদ্য, পণ্য, শাক-শবজি, ফলমুল, মাছ, মাংশ নিশ্চিত করতে সিটিকর্পোরেশনের নজরদারি জোরদার করা, স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় স্যানিটারী ইনেসপেক্টদের নগরীর খাদ্য-পণ্যের দোকানগুলি নিয়মিত পরিদর্শন করা, পশু জবাই করার পূর্বে ভেটেনারী সার্জন কর্তৃক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা নিশ্চিত করা। নগরীর বাজারগুলির নোংরা, অস্বাস্থ্যকর ও পরিবেশ উন্নত করা, স্লাটার হাউজ গুলির পরিস্কার, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সম্মত নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা, যত্রতত্র ফুটপাত ও রাস্তায় খাবারের দোকান, হোটেলগুলির খাবার বিক্রি বন্ধ করা। চট্টগ্রাম সিটিকর্পোরেশন এর আওতাধীন ১৭ টি বাজারগুলিকে নিয়মিত ভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার দর মনিটরিং, সিটিকর্পোরেশনের কাউন্সিলর, পুলিশ, চেম্বার, ক্যাব প্রতিনিধি, সাংবাদিক প্রতিনিধি সমন্বয়ে বাজার ভিত্তিক মনিটরিং কমিটি গঠন করা। ভোর হবার পুর্বেই রাস্তার পার্শ্বের ডাস্টবিনগুলির ময়লা পরিস্কার নিশ্চিত করা, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নাগরিক তদারকি ও নজরদারির আওতায় আনা। নালার উপর দোকান, অবৈধ স্থাপনা, নালা-নর্দমগুলি ঠিকমতো পরিস্কার করা, বাড়ীঘর তৈরীতে পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা রাখার নিশ্চিত করা। উন্নত রাস্ট্রগুলির আদলে বৃষ্টি বাদল হলেই পানি নিস্কাষনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার উদ্যোগ নেয়া। চট্টগ্রাম নগরীতে যানজট নিরসনে যত্রতত্র পাকিং, লক্কর যক্কর বাস ও গণপরিবহন গুলির আধুনিকায়ন ও সংখ্যা বৃদ্ধি, গণপরিবহনগুলির অব্যবস্থাপনা দূর, নগরে যাত্রী পরিবহনে মেট্রো রেল চালু, ট্রাফিক বিভাগ ও বিআরটিএর সাথে স্ষ্টুু সমম্বয়, পর্যাপ্ত বাস স্ট্যান্ড তৈরীর উদ্যোগ নেয়া, আবাসিক ও বানিজ্যিক ভবনগুলিতে পার্কিং সুবিধা নিশ্চিত করা, নগরীতে বাড়ীভাড়া বিঢম্বনার রোধে সিটিকর্পোরেশন এর কাউন্সিলরদের মাধ্যমে স্থানীয় ভাবে বাড়ী ভাড়া নিয়ে জটিলতা নিরসনে সালিশী বোর্ড গঠন করা, এলাকা অনুযায়ী বাড়ী ভাড়ার তালিকা তৈরী করা এবং সীমিত আয়ের ভাড়াটিয়াদের দীর্ঘ মেয়াদী কিস্তির ভিত্তিতে বহুতল ভবন ও ফ্লাট তৈরী করে আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহন করা। সিটিকর্পোরেশন নিজস্ব উদ্যোগে আরো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, নগরীর সকল বাড়ী, স্থাপনার তালিকা হালনাগাদ ও ডাটাবেস করা, হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে ভোগান্তি নিরসনে ত্রিপাক্ষিক গণশুনাণীর আয়োজন করা। নগরীতে যথেষ্ঠ পায়ে হাটার পথ যা ওর্য়াকওয়ে নিশ্চিত করার জন্য ফুটপাতগুলি হর্কারসদের দখলমুক্ত, রাস্তা বা মার্কেটগুলির সামনের অংশে হকার্সদের বসানো বন্ধ করে নগরীর সৌন্দয্য বৃদ্ধি করা, হকার্সদের বিকল্প পুর্নবার্সনের উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে নগরীর উন্মুক্ত স্থানে হলিডে মার্কেট স্থাপন ও ভাসমান হকার্সদের স্থায়ী পুনর্বাসন করা। সিটিকর্পোরেশনের আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভোক্তা অধিকার বিষয়ে ছাত্র/ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষক/শিক্ষিকা এবং সিটিকর্পোরেশনের আওতাধীন বাজারগুলিতেও সর্বসাধারনকে ভোক্তা অধিকার, নিরাপদ খাদ্য ও ব্যক্তিগত পয়ঃ প্রনালী বিষয়ে গণসচেতনতা ও শিক্ষা মুলক কর্মসুচির আয়োজন করা। নগরে সেবাদানকারী সরকারী সেবাদানকারী সংস্থাগুলির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত ও তাদের প্রশাসনিক এবং আর্থিক জবাবদিহিতাকে নাগরিক পরীবিক্ষনের আওতায় আনা। গ্যাস, পানি, বিদ্যুত, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাড়ীভাড়া, হোর্ল্ডিং ট্যাক্স, গণপরিবহন, বজ্য ও নগর ব্যবস্থাপনা, শিল্প এবং বানিজ্য ইত্যাদি বিষয়ে নাগরিক ভোগান্তি নিরসনে গ্রাহক, সেবাদানকারী সংস্থা ও ভোক্তা প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে ত্রিপাক্ষিক গণশুনাণীর ব্যবস্থা করা অন্যতম।