রমজানে পণ্যমূল্যের তালিকা থাকতে হবে

0
137

আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্যের ‍দাম ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে সব দোকানের সামনে মূল্য তালিকা টাঙানোর আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবদুল মান্নান। আর সাধারণ মানুষের ধর্মীয় আবেগের সুযোগ নিয়ে যাতে কেউ কালোবাজারি কিংবা অতিরিক্ত মুনাফা করতে না পারে সে বিষয়ে কঠোর নজরদারির ঘোষণা দিয়েছেন নগর পুলিশ কমিশনার মো.শফিকুল ইসলাম।

শনিবার চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তারা এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম চেম্বার পবিত্র রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল এবং সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান ও জেলা পুলিশ সুপার এ কে হাফিজ আখতার।

সিএমপি পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিরাপদ রাখতে ইতোমধ্যে পুলিশ প্রশাসন কাজ শুরু করেছে। রমজানের সময় সাধারণ নাগরিকরা যাতে মলম পার্টি-গামছা পার্টি-অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে না পড়ে, সেজন্য তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। বিগত সময়ের মত এবারও মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে রমজান ও ঈদ পালন করতে পারবেন।’

পবিত্র রমজান মাস শুরু আগে পুনরায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশ কমিশনার।

মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবদুল মান্নান বলেছেন, ‘পবিত্র রমজান উপলক্ষে নগরী ও জেলার প্রত্যেক উপজেলার ছোট-বড় সবধরণের বাজারের দোকানগুলোর সামনে পণ্যের মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখতে হবে। এ তালিকায় পাইকারী ও খুচরা দাম উল্লেখ করে দিতে হবে। এর ফলে অতিরিক্ত মুনাফা করা সম্ভব হবে না এবং ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি খুব সহজে এড়ানো সম্ভব হবে।’

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘কোনো ব্যবসায়ী অযাচিতভাবে কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পণ্য মজুদ করতে না পারে, সে ব্যাপারে তদারকি করা হবে। পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন বাজার এলাকায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের উদ্দেশে মাইকিং করা হবে।’

তিনি জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পবিত্র রমজান মাসজুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। শবে বরাতের আগে থেকেই বাজার তদারকি শুরু হবে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আখতার বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক না থাকার কারণে ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। তাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়ক দ্রুত সংস্কার করার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পুরো রমজান মাসজুড়ে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশ বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।’

চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আসন্ন রমজান উপলক্ষ্যে যথেষ্ট পরিমাণ ভোগ্যপণ্য chamber-meeting-16মজুদ রয়েছে। এছাড়া সরকার কোনো পণ্যের শুল্কও বৃদ্ধি করেনি। তাই এসময় বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।’

চেম্বার সভাপতি ভেজাল খাদ্য ও ফরমালিনযুক্ত ফলমূল বিক্রিকারীদেরকে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আহবান জানান।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা পিপি আবুল হাশেম, চেম্বারের জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি জামাল আহমেদ, পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র চৌধুরী মোহাম্মদ হাসনী, নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু, রেঁস্তোরা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন তালুকদার, টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ওসমান গণি, তামাকুমন্ডি বণিক সমিতির সভাপতি মাহমুদুল হক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এম ছালামত আলী প্রমুখ।

আন্তঃজেলা মালামাল পরিবহন সমিতির সভাপতি আসন্ন রমজানে মালামাল পরিবহনের সময় পুলিশী হয়রানির হাত থেকে তাদের রক্ষা করতে পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারের প্রতি আহবান জানান।

সভায় অন্যান্য বক্তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবি শক্তিশালী করার পরামর্শ দেন। এছাড়া তারা নিয়মিত বাজার তদারকি করা প্রস্তাব দেন।