লজ্জা, লজ্জা, শুধু লজ্জার পরাজয়

0
117

লজ্জা, লজ্জা, শুধু লজ্জার পরাজয়। এশিয়া কাপের আফগানদের অঘটনের শিকার হলো বাংলাদেশ। ফতুল্লা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের সঙ্গে ৩২ রানে হারে মুশফিকরা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টানা তিন ওয়ানডেতে পরাজয়ের পর এশিয়া কাপে দুর্বল মনোবল নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। নিজেদের বাজে বোলিং আর ফিল্ডিং দিয়ে বাংলাদেশ আফগানদের সুযোগ করে দেয় স্কোর বোর্ডে ২৫৪ রান যোগ করার। মাত্র ৬ উইকেট হারিয়েই আফগানরা নির্ধারিত ওভার শেষে ২৫৫ রানের টার্গেট ছুড়ে দেয় বাংলাদেশের সামনে। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতায় মুশফিকদের ইনিংস শেষ হয় মাত্র ২২২ রানে ৪৭.৫ ওভারে। সেসঙ্গে ওয়ানডের ১১তম দল আফগানরা প্রথম বার কোন টেস্ট খেলুড়ে দেশকে হারিয়ে নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিলো। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিপক্ষ আফগানরা এ জয় দিয়ে জানান দিলো তাদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জয় সহজ হবে না। আফগান বোলার হামিদ হাসান এ ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন এশিয়াকাপের চারটি টেস্ট খেলুড়ে দলের মধ্যে যে কোন একটিকে হারাতে পারলেই হবে তাদের সব চেয়ে বড় অর্জন। শেষ পর্যন্ত সে বড় আর্জনটি ধরা দেয় গত এশিয়া কাপের রানার্স আপ বাংলাদেশের হতাশা আর লজ্জার রাত উপহার দিয়ে।
১৫৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে বাংলাদেশের প্রথম দুই উইকেটের পতন হয় দলীয় ২ রানের সময়। দলের স্কোর বোর্ডে ১ রান যোগ হতেই সাপুর জার্দানের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন ০ হাতেই শামসুর রহমান শুভ। দ্বিতীয় আঘাতটি হানেন আফগানদের আরেক পেসার হামিদ হাসান। এবার আম্পায়ারের এক বাজে সিদ্ধান্তে আউট হন এনামুল হক বিজয়। তার নামের পাশে যোগ হয়েছিল মাত্র ১ রানই। এরপর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ও মুমিনুল হক সৌরভ। এ জুটি ৬৮ করে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। কিন্তু ইনজুরি আক্রান্ত অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ২৩ রানের অবদান রেখে আবারও আম্পারের বাজে সিদ্ধান্তের শিকার হন। আফগান অধিনায়ক মো. নবীর বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে সাজঘরে পথ ধরলে আবরও বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর নাসির হোসেন ও মুমিনুল হাল ধরার চেষ্টা করলে মাত্র ১৯ রান আসে এ দু’জনের জুটিতে। নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ার দ্বিতীয় ফিফটি করে আউট হন মুমিনুল হকও। ধীরে ধীরে নিভে আসতে শুরু করে বাংলাদেশের জয়ের আশা।
তবে এবার আশার আলো দেখান নাঈম ইসলাম ও নাসির হোসেন। এ দু’জন ৫ম উইকেটে ৭৩ রানের জুটি গড়ে দলের বিপর্যয় সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিধিবাম শেষরক্ষা যেন হওয়ারও ছিল না। ৬০ বলে ৪১ রান করা নাসির আউট হলেন দলীয় ১৬১ রানের সময়। আর যেখানেই যেন মরক লাগে বাংলাদেশের। দলের স্কোর বোর্ডে ৪টি রান যোগ হতেই অবদুুর রাজ্জাক ০ রানে ক্রিজে ফিরেন রান আউট হয়ে। এরপর আরাফাত সানিও ০ রানে সাজঘরে ফিরলে ১৬৫ রানেই ৮টি উইকেটের পতন ঘটে।
দলে এমন ব্যাটিং বিপর্যয় থেকেই শুরু জিয়াউর রহমানের লড়াই। ৪টি চার ও ৩টি ছয়ের মারে ৪১ রান করে দলের স্কোর বোর্ডকে ২০০ রানের সীমানা পার করে। কিন্তু দলীয় ২০৫ রানের সময় জিয়াও বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন। সেখানেই শেষ হয়ে আসে বাংলাদেশের সব আশার আলো কারণ হাতে সেলাই নিয়ে তখন মাঠে খেলতে নেমে। অন্য পাশে বোলার রুবেল হোসেনকে নিয়ে লড়াইটি শুধুই আরেকটি লজ্জার অপেক্ষা। শেষ পর্যন্ত রুবেল ১৭ রান করে আউট হলে মেনে নিতে হয় ৩২ রানের লজ্জার পরাজয়।