শুভ বিজয়া দশমী

0
189

আজ শুভ বিজয়া দশমী। দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার পাঁচদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটবে দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জনের মাধ্যমে। দশমীর দিন ভক্ত সম্প্রদায়ের মনে বিষাদের সুর ধ্বনিত হবে দেবী দুর্গা কৈলাসে পতিগৃহে চলে যাবেন বলে, তবু পাঁচদিনের শারদাঞ্জলি স্মৃতি, সম্প্রীতি আর কোলাহলের রেশ চলবে দীর্ঘদিন ধরে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করবেন আগামী বছরের এই শারদ নিবেদনের জন্যে।
পুরান মতে, ত্রেতাযুগে রামচন্দ্র সীতা উদ্ধারে শক্তির দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন শরৎকালে সে থেকে এ পূজা শারদীয়া পূজা নামে অভিহিত। এটিকে দেবীর অকালবোধন বলা হয়। দুর্গাপূজা বসন্তকালেও সম্পন্ন হয়ে থাকে, এটি তাই বাসন্তী পূজা নামে পরিচিত। আমাদের দেশে শরৎকালেই দুর্গাপূজা সাড়ম্বরে ও আনন্দ উদ্দীপনায় অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
দেবী দুর্গা একদিকে শক্তির প্রতীক, শুভ কল্যাণের প্রতীকও তিনি। শক্তিরূপে তিনি অশুভ আর অকল্যাণের প্রতীক মহিষাসুরকে সংহার করে শান্তি আনয়ন করেন। অন্যদিকে তিনি নারীশক্তিরও প্রতীক।
হিন্দু সম্প্রদায়ের এই সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় উৎসবে দেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ সম্প্রীতি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আমাদের দেশে নানা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলি বৃহত্তর সামাজিক উৎসবের রূপ নিয়েছে। সম্প্রীতি ও সদ্ভাবের সুর ধরা পড়ে জাতীয় জীবনে এবং এটিই বাংলাদেশের বাঙালি জীবনের চিরায়ত ঐতিহ্য। মাঝে মাঝে স্বার্থান্বেষী মহল এই সম্প্রীতিতে ফাটল ধরাতে অপচেষ্টা করে। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ায় কিন্তু সরকার ও সচেতন দেশবাসী তা রুখে দেয়-এতে জনমনে আস্থার সঞ্চার হয়।
আমরা বিশ্বাস করি ‘ধর্ম যার যার- সমাজ-রাষ্ট্র-উৎসব সবার’-এই মর্মবাণী অনুধাবন করতে পারলে বিশ্বের মানুষ সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে, হিংসা-দ্বেষ-ভেদাভেদ ভুলে শান্তির পৃথিবী গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত হবে।
সকল সংকীর্ণতা, স্বার্থপরতা, উগ্র মতান্ধতা পরিহার করে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের সমাজ ও দেশকে গড়ে তুলবো, দেশকে বিশ্বসভায় গৌরবের আসনে প্রতিষ্ঠা করবো- এই হোক দেশবাসীর দৃঢ় অঙ্গীকার।
শারদীয় দুর্গোৎসব ও শুভ বিজয়া দশমী উপলক্ষে আমরা হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইবোনদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।