শুরু হয়েছে ৩ দিনব্যাপী স্বর্ণমেলা

0
78

আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিকের পিএইচপি পেলিকান মেহজাবিন ভবনে শুরু হয়েছে ৩ দিনব্যাপী স্বর্ণমেলা।

রোববার (২৩ জুন) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

তিনি বলেন, স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের হতাশা ছিল। তারা হয়রানির শিকার হচ্ছিলেন। জনবান্ধব সরকার জনগণের কল্যাণ, সুবিধা অসুবিধা চিন্তা করে। এরই অংশ হিসেবে স্বর্ণ ব্যবসার বৈধতা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের পরিবর্তনে ব্যবসায়ীদের বড় অবদান রয়েছে। ব্যবসায়ীদের ওপর অহেতুক কর চাপিয়ে দেয় না সরকার। কর দিয়ে দেউলিয়া হয়েছে এমন ব্যবসায়ী নেই। দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে কর দেন। দেশকে এগিয়ে নিতে কর দেন। করের টাকা দেশের উন্নয়নে ব্যয় হচ্ছে বলে দেশের সমৃদ্ধি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ভালো করে জানেন, দেশের পাসপোর্টের সম্মান বেড়েছে। ভাবমূর্তি বেড়েছে।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) কালিপদ হালদার, কাস্টম এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হক, চট্টগ্রাম কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন ও বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি চট্টগ্রামের সভাপতি মৃণাল কান্তি ধর।

সভাপতিত্ব করেন স্বর্ণমেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক জিএম আবুল কালাম কায়কোবাদ।

এনবিআর সদস্য কালিপদ হালদার বলেন, এনবিআর শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক নয়- এ বার্তা নিয়ে এসেছি। দেশের রাজস্বের সিংহভাগ আসে চট্টগ্রাম থেকে। ২০০৫ সালে যে চট্টগ্রাম দেখে গেছি তার থেকে অনেক উন্নত হয়েছে। ফ্লাইওভার হয়েছে।

তিনি বলেন, আবহমানকাল থেকে মানুষের দুর্দিনের সঞ্চয় ছিল স্বর্ণ। বংশ পরম্পরায় স্বর্ণের ব্যবসা চলে আসছে। বর্তমান সরকার স্বর্ণ নীতিমালা ঘোষণা করেছে। এতে ব্যবসায়ীদের ভীত হওয়ার কারণ নেই। এটি বড় সুযোগ, বুক ফুলিয়ে ব্যবসা করার। মূল স্রোতধারায় আসার। আমি আশ্বাস দিচ্ছি, স্বর্ণ নীতিমালার কারণে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হবেন না।

মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, এ মেলার ব্যাপ্তি ও প্রভাব শত বছর থাকবে। সরকার প্রথমবারের মতো স্বর্ণ ব্যবসায় বিনিয়োগকে বৈধতা দিচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে হয়রানি শব্দটি থাকবে না। সামান্য ট্যাক্সে পুঁজি বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করছে স্বর্ণমেলা।

আগামী দিনে ভ্যাট আইনের সুফলগুলো গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।

মৃণাল কান্তি ধর বলেন, স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের আয়কর, রাজস্ব, চসিকের ট্রেড লাইসেন্স ফি, ডিলিং লাইসেন্স ফি দেওয়ার পরও প্রকৃত ব্যবসায়ীরা হয়রানির মুখে পড়ছেন। চট্টগ্রাম নগরে ৫ হাজার ২০০ জুয়েলারি দোকান। এর মধ্যে বৈধ ১ হাজার ৭০০টি। যারা ট্যাক্সের আওতায় নেই তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

১০ জন সিনিয়র কর আইনজীবী বিনামূল্যে ৩০ জুন পর্যন্ত স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সেবা দেবে বলে জানান মো. জামাল উদ্দিন।

স্বাগত বক্তব্যে অতিরিক্ত কর কমিশনার মফিজ উল্লাহ বলেন, সরকার এ মেলাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। মেলার ৩ দিন ছাড়াও ৩০ জুন পর্যন্ত কর অঞ্চলে ঘোষণা দিতে পারবেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।

আয়কর বিভাগ আয়োজিত এ মেলায় নিবন্ধিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের অঘোষিত ও মজুদ স্বর্ণ, স্বর্ণালংকার, কাট ও পলিশড ডায়মন্ড এবং রৌপ্যের ঘোষণার বিপরীতে কর পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। প্রতি ভরি স্বর্ণে ১ হাজার টাকা, রৌপ্যের জন্য ৫০ টাকা, প্রতি ক্যারেট কাট ও পলিশড ডায়মন্ডের জন্য ৬ হাজার টাকা কর পরিশোধ করতে হবে।

এছাড়া মেলায় রয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায় জড়িত নতুন করদাতাদের ইটিআইএন প্রদান, চট্টগ্রামের প্রতিটি কর অঞ্চলের জন্য পৃথক বুথে ঘোষণা ফরম গ্রহণ, আয়কর পরিশোধের জন্য সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের বুথ ও পরামর্শ কেন্দ্র। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মেলা চলবে। নতুন করদাতাদের ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয় পত্রের ছায়াকপি সঙ্গে আনতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।