শ্রমিক কর্মচারী লীগ (সিবিএ) সংবর্ধনা

0
80

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত অস্থায়ী সেবক, শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবী পূরণ করায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন শ্রমিক কর্মচারী লীগ (সিবিএ) এর পক্ষ থেকে সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনার জবাবে সিটি মেয়র পরিস্কার পরিচ্ছন্ন,নির্মল সকাল এবং পরিবেশ বান্ধব নগর উপহার দিতে চসিকে কর্মরত -কর্মচারীদের শতভাগ দায়িত্ব নগরবাসীর প্রতি উৎসর্গ করার আহবান জানিয়েছেন । আমি আপনাদের দায়িত্ব নিলাম,আপনারা নগরবাসীর দায়িত্ব নিন। আপনাদের কাজই আমার হৃদয়ের গভীরে স্থান হবে বলে মেয়র সকলকে আশ্বাস্থ করলেন । আজ রবিবার সকালে নগরীর আউটার স্টেডিয়াম সবুজমেলা মঞ্চে বিশাল সংবর্ধনা সভায় সংবের্ধয় ব্যক্তি সিটি মেয়র এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। চসিকের ইতিহাসে এই প্রথম সিবিএ কর্তৃক সংবর্ধিত হলেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীরমুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এদেশের খেটে খাওয়া মানুষের দল । এই দল জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। জনগণ জানে, আওয়ামী লীগ যখনি ক্ষমতায় আসে, তখনি তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন খেটে খাওয়া মানুষ তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশ বান্ধব নগর গড়তে সিটি মেয়রকে সহযোগিতা করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন আপনাদের শ্রম,সাধনা কখনো ব্যর্থ হবে না,সিটি মেয়র মুখে যা বলেন, অন্তরে তা তিনি ধারণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন এ নেতা আপনাদের দাবী দাওয়া অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করে দেবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। জনাব মাহতাব উদ্দীন আরো বলেন পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে দেশী – বিদেশীদের অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল । সকল জল্পনা – কল্পনা ও যড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেইদিন ঘোষনা দিয়েছিলেন আমরা বীরের জাতি,আমরা পারি। বিদেশীদের অর্থায়ন ছাড়াই নিজেদের অর্থদিয়ে এই পদ্মা সেতু নির্মাণ হবে। সেই ঘোষনা আজ অক্ষরে অক্ষরে রক্ষা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হয়েছে। দেশের মানুষের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ববোধ এবং জনগনের অনুপ্রেরণায় এটা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সিটি মেয়র নগরবাসীদের সহযোগিতা কামনা করে বলেন পরিচ্ছন্ন কাজে নগরবাসীর সহযোগিতা পাওয়া গেলে পরিচ্ছন্ন কাজে নিয়োজিত কর্মীরা নগরকে আরো সুন্দর থেকে সুন্দরতম করতে সক্ষম হবে। তিনি আরো বলেন,যখনই সুযোগ পাচ্ছি,তখনই আমার শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য কিছু না কিছু করার চেষ্টা করেছি। আমার কাছে দাবী- দাওয়ার দরকার নেই । পর্যায়ক্রমে সকল দাবী দাওয়া পূরণ করা হবে মর্মে উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন আমার জানা নেই, বাংলাদেশের কোথাও কোনো অস্থায়ী কর্মচারী বৈশাখী ভাতা,ঈদ বোনাস পায় কিনা ? তবে আমার হাতে সুযোগ ছিল বলে কর্পোরেশনের অস্থায়ী কর্মকর্তা – কর্মচারীদের এই ভাতা দিয়েছি। সিটি মেয়র নগরীকে নিরাপদ ও বাসযোগ্য নগরী গড়ার পিছনে সেবকদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মারণ করেন । তাদের সেবায় নগরীকে পরিস্কার পরিচ্ছন্œ রাখা সম্ভব হয়েছে। প্রসঙ্গেক্রমে তিনি ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানী পশুর বর্জ্য অপসারণের কথাও তুলে ধরেন। নগরীর পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সিটি মেয়র বলেন ইতোপূর্বে এই নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে ১৩৫০টি ডাস্টবিন ছিল । সেই জায়গা থেকে ৭৫০টি ডাস্টবিন অপসারণ করে ৬০০ টিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। বাকীগুলো পর্যায়ক্রমে অপসারণ করা হবে। বলা যায় বর্তমানে এই শহরটি একটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশ বান্ধব শহর। নেই কোথায়ও ময়লার ভাগাড়। এই প্রসঙ্গে সিটি মেয়র বলেন, নগরকে পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে ডোর- টু-ডোর প্রকল্প গ্রহন করি। ডোর টু ডোর কার্যক্রমে ২ হাজার সেবক নিয়োগ করা হয়। যার মধ্যে হরিজনদের মধ্যে থেকে ৭ শত সেবক নিয়োগ দেয়া হয়। ভবিষ্যতে লোক নিয়োগের সময় হরিজনদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন সেবকদের জীবনমান উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক ইচ্ছায় ৩টি সেবক কলোনীতে ১৪ তলা বিশিষ্ট আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ৬টি বহুতল ভবন নির্মাণ করার প্রক্রিয়া চলছে। যেখানে ১৩১৪টি ফ্ল্যাট থাকবে। বরাদ্দ দেওয়া হবে শুধুমাত্র হরিজনদের। মেয়র বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ হতদরিদ্র মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, উপবৃত্তি, নারী শিক্ষার প্রসারসহ বিভিন্ন ভাবে ১ কোটি মানুষকে সহযোগিতা করছেন সরকার। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবো। এজন্য তিনি শেখ হাসিনার হাতকে শাক্তিশালী করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি ঘোষণা করেন নিয়োগ বিধি অনুমোদন হয়েছে। জৈষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে শূন্যপদ পূরণে স্থায়ী করা হবে। এ ব্যাপারে কোন তদবির গ্রহণ করা হবে না বলে সকলকে সর্তক করলেন মেয়র। অনুষ্ঠানে সিবিএ’র পক্ষ থেকে সিটি মেয়রকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা এবং জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ্ব সফর আলী, চসিক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন,হাসান মুরাদ বিপ্লব, মো. গিয়াস উদ্দিন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। চসিক সিবিএ এর সভাপতি ফরিদ আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সংবর্ধনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক মো. মোরশেদুল আলম চৌধুরী। এতে আরো বক্তব্য রাখেন সিবিএ এর সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহিদুল আলম চৌধুরী, মো. ইয়াছিন, রুপন কান্তি দাশ,আবুল মাসুদ,মো. ফরিদ,ওয়ালিমুল আজিম সোহেল ও হরিজন সম্প্রদায়ের পক্ষে দিলীপ দাশ।মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন চসিক কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু, গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, হাজী নুরুল হক, আবুল হাসেম, এস এম এরশাদুল্লাহ, মো. জাবেদ, ছালেহ আহম্মদ চৌধুরী, আব্দুল কাদের, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, মো. ইসমাঈল বালী, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আঞ্জুমান আরা বেগম, মনোয়ারা বেগম মণি, এবং সচিব আবু সাহেদ চৌধুরী, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়–য়া, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাসেম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী। অনুষ্ঠান সঞ্চলনায় ছিলেন মুজিবুর রহমান ও বিপ্লব চৌধুরী।