সকল দলের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন চাই-ড. মুহাম্মদ ইউনূস

0
99

ড. মুহাম্মদ ইউনূস‘২৫ অক্টোবর নিয়ে দেশের মানুষ চরম আতঙ্কে আছেন’, বলে মন্তব্য করেছেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে সরকার এবং বিরোধী দলের পরষ্পর বিরোধী অবস্থানের কারণে দেশের মানুষ চরম উৎকন্ঠায় আছেন। সবার মধ্যে এখন একটাই প্রশ্ন? ২৫ অক্টোবরের পর কি হবে? মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারব তো? স্বাধীন দেশে এত অনিশ্চয়তা, আতঙ্ক কেন ?’

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামে আয়োজিত এক নারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেন।

নগরীর লেডিস ক্লাবে ‘শিক্ষা, শিল্প-সাহিত্য ও সমাজ কর্মে উদ্যোগী নারী সমাবেশ’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘নোবেল জয়ী ড. ইউনূস সুহৃদ-চট্টগ্রাম’ নামে একটি সংগঠন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা সকল দলের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন চাই। আমরা অশান্তি চাই না, আমরা শান্তিতে ভোট দিতে চাই। আমরা কোন দুর্যোগের মধ্যে পড়তে চাই না। এখনও সময় আছে, অশান্তির দরজা যাতে খুলে না যায় সেই ব্যবস্থা নিন। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। নিয়মের মধ্যে থাকতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনও কি সরকারের খেয়াল খুশিমত হতে হবে? আমরা কি ভোট দিতে পারব না? বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে সেই নির্বাচন জনগণ মানবে না।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরুর দীর্ঘ বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘ব্যাংকের উপর কেউ হাত দিলে সেই হাত ভেঙ্গে দিতে হবে। ৮৪ লক্ষ মহিলার গ্রামীণ ব্যাংককে সরকার নিজেদের দখলে নিতে চাচ্ছে। এজন্য সরকারের সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব চলছে। সরকার আমার উপর আক্রমণ করছে। আমরা গরীবদের জন্য ব্যাংক বানিয়েছি, কোন সরকারের কাছে বেচে দেয়ার জন্য নয় কিংবা কোন সরকারকে দখলে নিয়ে যেতে দেবার জন্য নয়।’

গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করে বলেন, ‘সরকার কখনও বলে, গ্রামীণ ব্যাংকে নাকি সুদের হার বেশি। সরকারি ব্যাংকে সুদের হার ২৭ শতাংশ আর গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার ২০ শতাংশ। আবার কখনও বলে আমি নাকি গ্রামীণ ব্যাংকের ৩০ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছি। পরে বলে, ৩০ হাজার কোটি টাকা না, ১০ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছি। তদন্ত কমিশন একটা করেছে, সেই কমিশন তদন্ত রিপোর্টই দিতে পারছে না।’

দেশের বিভিন্ন অগ্রযাত্রায় নারীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে ড.ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ মুসলমান দেশ। মুসলমান দেশের অভ্যাস, নারীদের ঘরে বন্দি করে রাখা। কিন্তু সম্পূর্ণ মুসলমানিত্ব বজায় রেখে, সেই কাঠামোর ভেতরে থেকে নারীরা এদেশকে পাল্টে দিয়েছে।’

নারী উদ্যোক্তা ও চিটাগং উইম্যান চেম্বারের সভাপতি কামরুন মালেকের সভাপতিত্বে নারী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দার খান, স্থপতি জেরিনা হোসাইন, অধ্যাপিকা আনোয়ারা আলম, ডিজাইনার আইভি হাসান, লেখিকা রুনু সিদ্দিকী।