সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করায় বাদির চোখ উৎপাটন দিলেন

0
36

নিজস্ব প্রতিবেদক

কক্সবাজারের পেকুয়ায় সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে করা মামলার বাদি সাইফুল ইসলামের (৩৫) চোখ গুড়িয়ে দিয়েছেন দূর্বৃত্তরা। এ সময় তাকে বাঁচাতে অপর ভাই আনসার বাহিনীর সদস্য মোঃ মাহাবু (২৯) ও তার মা মরিয়ম আক্তার এগিয়ে আসলে তাদেরকেও কুপিয়ে আহত করা হয়।

শুক্রবার সকাল ১০টায় শিলখালী ইউনিয়নের কাচারী মোড়াস্থ সবুজ পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতেরা একই এলাকার সালামত উল্লাহ ছেলে ও স্ত্রী। দুই সহোদরকে গুরুতর অবস্থায় পেকুয়া সরকারি হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

সালামত উল্লাহ বলেন, গত ১২ মার্চের দিকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমাকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা চালায় একই এলাকার সামশুল আলমের ছেলে মোঃ শফি, মোঃ বেলাল ও তার ছেলে মফিজ। এ অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে গত ১৮মার্চ ছেলে সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে পেকুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করছে পেকুয়া থানার এসআই সঞ্চিত। মামলার করার পর বেশ কয়েকবার তারা আমার সন্তানদের হত্যার চেষ্টা করে। এরই মাঝে গত এক সপ্তাহ আগে সুস্থ হয়ে বাড়িতে গেলে আবারো হামলা চালিয়ে আমাকে ও আমার স্ত্রী মরিয়মকে আহত করে। ঘটনার সাথে সাথে এসআই সঞ্চিতকে হামলার বিষয়টি অবগত করলে তিনি সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওই ঘটনায় তারা এসআই সঞ্চিতকে ম্যানেজ করে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে একটি এজাহার তার হাতে দেন।

এসআই সঞ্চিতের হাতে তারা এজাহার দেয়ার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে আমার দুই সন্তানকে প্রাণে হত্যা করার হুমকি দিয়ে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকালে তাদের তিনজনের নেতৃত্বে সামশুল, দিদার, জাফর ও নন্যামিয়াসহ সংঘবদ্ধ সান্ত্রসীরা মামলার বাদি আমার ছেলে সাইফুল ইসলাম, মাহাবু ও স্ত্রীকে তাদের বাড়ির সামনে এক পেয়ে মারধর করে গুরুতর আহত করে। একপর্যায়ে সাইফুল ইসলামকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। ওখানে তার চোখ গুড়িয়ে দেয়া হয়।

চমেক হাসপাতাল থেকে মোঠোফোনে আহত আনসার সদস্য মাহাবু বলেন, মাসহ দুই ভাই মটর সাইকেল যোগে কাচারী মোড়া সড়ক হয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। ওই সময় সংঘবদ্ধ আসামীরা তাদের বাড়ির সামনে পূর্ব পরিকল্পনামত দাঁড়িয়ে থাকেন। একপর্যায়ে তারা আমাদের গতিরোধ করে সাইফুলকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর শুরু করে। আমরা এর প্রতিবাদ করায় আমাদেরকেও মারধর করে আহত করা হয়। একপর্যায়ে সাইফুলকে বাড়ির ভিতর নিয়ে যাওয়া হয় এবং রক্তাক্ত অবস্থায় আমাদের সামনে রেখে দেওয়া হয়। ওই সময় আমাদের ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি ভেঙে দেয়া হয়। ছিনিয়ে নেয়া হয় ব্যবহৃত মোঠোফোন। যে মোঠোফোনে রক্ষিত অনেক তথ্য থাকায় তারা ছিনিয়ে নেয়। আমি মনে করি স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন, থানার এসআই সঞ্চিত ও ইউপি সদস্য আবদুল মালেক এর প্রভাবে আমাদেরকে প্রাণে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

পেকুয়া থানার এসআই সঞ্চিত বলেন, সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে একটি মামলা করেন। যে মামলাটির তদন্ত আমি করছি। শুক্রবারের ঘটনাটি সম্পর্কে আমাকে আগে থেকে কেউ জানায়নি। থানার দিকে যাওয়ার সময় সালামত উল্লাহর সাথে দেখা হলে জিজ্ঞেস করি কোথায় যাচ্ছে। ওই সময় তিনি বলেন, তার দুই সন্তানকে আহত করা হয়েছে। দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে দেখি সাইফুলের চোখে আঘাত আর মাহাবুর হাতে আঘাত। এর চেয়ে আর বেশি কিছু জানিনা।

পেকুয়া থানার ওসি কামরুল আজম বলেন, হামলার বিষয়টি জানার সাথে সাথে হাসপাতালে গিয়ে আহতদেরকে দেখে আসি। এবিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে এজাহার দেয়া হলে মামলা রুজু করা হবে।