সাইফুলের সাজানো সংসার ভেঙ্গে গেল

0
82

পটিয়াশফিউল আজম,পটিয়া প্রতিনিধি॥ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরাকান সড়কের পটিয়া উপজেলার মনসা বাদাম তলা এলাকা শুক্রবার যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিক্ষার মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় একই পরিবারের ৩জনসহ ৫জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় ২ পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
শুক্রবারের এ মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহতরা হলেন সিএনজি চালিত অটোরিক্ষা চালক সাইফুল ইসলাম (২৫), কাকন সেন (৩), মিল্টন সেন(২৪), আনিক সেন(৭), রুপনা সেন (২৮) আহতরা হলেন, কাঞ্চন সেন(৪০), অনামিকা সেন (২৫), অঞ্জন সেন(২৬), আপন সেন(৮)। হতাহত সবার বাড়ি উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের সেন পাড়া এলাকায়।
হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী নিহত অনিক সেন (৭) ও কাকন সেন (৩) ছাড়া মিণ্টন সেন (২৪), রূপনা সেন (২৮), কে শনিবার বিকেলে দাহ করা হয়। এছাড়া সিএনজি অটোরিক্ষা চালক সাইফুল ইসলামকে যানাযা শেষে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
শনিবার বিকেলে উপজেলার কেলিশহর সেনপাড়া এলাকায় নিহতের বাড়ী গিয়ে দেখা যায় দুই পরিবারে চলছে শোকের মাতম। নিহত স্বজনের সাথে কথা বলতে চাইলে সবাই যেন কথা বলার শক্তি সামর্থ হারিয়ে ফেলেছে। নিহত সিএনজি অটোরিক্ষা চালক সাইফুলের স্ত্রী শারমিন আকতার অবুঝ দুই শিশু পুত্রকে নিয়ে ঘরের এককোণে নির্বাক ভাবে বসে থাকে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সাইফুল সকালে আমাকে ৪/৫ দিনের জন্য বাপের বাড়িতে বেড়াতে পাঠাই। শুক্রবারেই সে লাশ হয়ে ঘরে ফেরে। সে জানাই তার ৪ মাসের কন্য সন্তান ও দেড় বছরের আদরের শিশু ফাহিম উদ্দীন আর কোন দিন বাবার আদর পাবেনা। প্রতিদিন সকালে তাদের বাবা সাইফুল ঘর থেকে বের হওয়ার আগে ও ঘরে ফেরার পর আদরের দুই শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করতো।
ঘরে গিয়ে দেখা যায় অবুঝ দুই শিশু সন্তান মনের অজান্তে ঘরের মেঝেতে শুয়ে শুয়ে শিশুদের নিজস্ব ভঙ্গিমায় হাউমাউ করে খেলাধুলা করছে। এ অবুঝ শিশুরা হয়তো জানেনা তাদের বাবা তাদের কোলে নিয়ে দু’গালে আর কখনো আদর মাখা চুমু খাবে না। সে চলে গেছে না ফেরার দেশে। সাইফুলের বাবা সামসুল আলম জানান, তাদের নি¤œ-মধ্যবিত্ত পরিবারে সাইফুলেই ছিল আয় রোজগার ও পরিবারের ভরণ পোষণের অন্যতম মাধ্যম। পাঁছ ছয় মাস পূর্বে নগরীর মুরাদপুরে এশটি পেরেক কোম্পানীতে অল্প বেতনে চাকুরী করতো। পরে ভাড়া করা একটি সিএনজি অটোরিক্ষা চালিয়ে সে পরিবারের হাল ধরেছিল। তার বাবা সামসুল আলম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আজ আমার সাজানো সংসার ভেঙ্গে গেল। ৪ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে সাইফুল ছিল তার দ্বিতীয় পুত্র। সাইফুলের মা শাহেরা বেগম ছেলের কথা বলে বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছিলেন।

নিউজচিটাগং২৪.কম/আনিস