সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আর নেই

0
62

কাজী জাফর আহমেদ১সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।

বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৭টায় তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান। কাজী জাফরের সহকারী ব্যক্তিগত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান রনি এই মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করছেন।

হৃদযন্ত্র ও কিডনির সমস্যা ছাড়াও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন এই রাজনীতিবিদ। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

কাজী জাফরের বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (একাংশ) ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক।

এদিকে, কাজী জাফরের মৃত্যুতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান খালেদা জিয়ার শোক প্রকাশের কথা জানিয়েছেন।

গত ১৩ মে খুলনা সফরের সময় বাথরুমে পা পিছলে পড়ে গিয়ে কোমরে আঘাত পান কাজী জাফর। পরে তাকে দ্রুত ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বিদেশেও চিকিৎসা করান এই নেতা।

১৯৩৯ সালের ১ জুলাই কুমিল্লার বিখ্যাত চিওড়া কাজী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন কাজী জাফর।

ছাত্র অবস্থা থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ছাত্র ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২-১৯৬৩ সালে অবিভক্ত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (এপসু) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।

১৯৬২ সালে সামরিক শাসন ও শরীফ শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে কাজী জাফর আহমদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ছাত্র জীবন শেষে শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন। টঙ্গী অঞ্চলের একজন প্রভাবশালী শ্রমিক নেতা ছিলেন তিনি।

১৯৭২-১৯৭৪ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন কাজী জাফর। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি ইউনাইটেড পিপলস্ পার্টির (ইউপিপি) প্রথমে সাধারণ সম্পাদক ও পরে চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রী পরিষদের শিক্ষামন্ত্রী হন তিনি।

১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির জন্মলগ্ন থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৬-১৯৯০ সালে তিনি জাতীয় পার্টির সরকারে পর্যায়ক্রমে বাণিজ্য, বন্দর-জাহাজ ও নৌ, তথ্য এবং শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে এরশাদের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও প্রধানমন্ত্রী হন।

১৯৮৬-১৯৯৬ পর্যন্ত পরপর তিনবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এরশাদের সঙ্গে রাজনৈতিক মতদ্বৈতার কারণে ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর বিশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির (একাংশের) চেয়ারম্যান হন কাজী জাফর।