‘সেবায় নিয়োজিত সকল সংস্থার সমন্বয়ে নগরবাসীর সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব’

0
91

সেবায় নিয়োজিতগনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পরিপত্রের মাধ্যমে সেবাদানকারী সরকারী, আধাসরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সমন্বয় করার বিধান জারীর প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ৩ আগষ্ট বুধবার, দুপুরে নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে নগরীর সেবাদানকারী সরকারী, আধাসরকারী, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান সমূহের প্রধানদের সাথে সমন্বয় সভা করেন। সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভা উপস্থাপনায় ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম। সভায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন, বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল খালেদ ইকবাল, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর পিপিএম, চট্টগ্রাম ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন চৌধুরী, বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিঃমহাব্যবস্থাপক চৌধুরী মো. ইসা-ই খলিল, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর শাহেদা ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম সামসুল করিম, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. আজহারুল ইসলাম, গনপূর্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির চৌধুরী, চট্টগ্রাম ওয়াসার সচিব মো. সামসুদ্দোহা, বিটিসিএল এর মহাব্যবস্থাপক তমাল কান্তি নন্দী, কর্ণফূলী গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী মহাব্যবস্থাপক সামসুর রহমান খান, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র ধর, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর পরিচালক মো. আজাদুর রহমান মল্লিক, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম উপ পরিচালক নিউটন দাস, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের উপ পরিচালক মো. মোখলেছুল রহমান, সমাজ কল্যান অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ পরিচালক বন্দনা দাশ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রভাতি দেব, জেলা পানি সম্পদ কর্মকর্তা শাহেদা আখতার সহ সমন্বয় সভায় ২০ টি দপ্তরের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।সভায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আবুল হোসেন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা মিসেস নাজিয়া শিরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, সিটি ম্যাজিষ্ট্রেট সনজীদা শরমিন, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মাহফুজুল হক, স্থপতি এ কে এম রেজাউল করিম সহ চসিক বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। সমন্বয় সভায় সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন তাঁর ক্লিন ও গ্রিন সিটির ভিশন সহ কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করে বলেন, সেবায় নিয়োজিত সকল সরকারী, আধাসরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার সমন্বয়ের মাধ্যমে নগরবাসীর সেবা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, নাগরিক সেবা দিতে গিয়ে নানামূখী জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতার কারনে কাংখিত সেবা যথা সময়ে দেয়া যাচ্ছে না। মেয়র বলেন, নাগরিকদের প্রদেয় ট্যাক্স নির্ভর সিটি কর্পোরেশনের সেবা। সেদিকে প্রাধান্য দিয়েই নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে হচ্ছে।এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার ঘোষিত পে-স্কেল বাস্তবায়ন করার কারনে কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাসিক খরচ ৯ কোটি থেকে বেড়ে ১৬ কোটিতে উন্নিত হয়েছে। খরচ বাড়লেও কর্পোরেশনের আয়ের পথ সীমিত। নানামুখি সীমাবদ্ধতা সত্বেও নাগরিক সেবায় তাদের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। নগরীর জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে সিটি মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন সহ নগরীর নানামুখি উন্নয়ন সহ নগর সুরক্ষায় জাইকা ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে। ইতোমধ্যে জাইকা আউটার রিং রোড নির্মাণ, পানি উন্নয়ন বোর্ড মদুনাঘাট থেকে পতেঙ্গা নেভাল একাডেমী পর্যন্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণ, বন্যা প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণ, বেড়িবাঁধের উপর ৪ লেইন সড়ক নির্মাণ সহ ছোট বড় ২৬ টি খালের মুখে পাম্প হাউস এবং স্ল্যুইচ গেইট নির্মাণ এর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এছাড়াও জনস্বার্থে বন্দর কর্তৃপক্ষের বে-টার্মিনাল নির্মাণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তাছাড়া সরকার পতেঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নগরীর এয়ারপোর্ট সড়ক থেকে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক উন্নয়ন, রাস্তা প্রশস্থকরন, খাল খনন সহ ত্রি-বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। মেয়র বলেন, ওয়াসার মাধ্যমে পানির চাহিদা পুরনে নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে জাইকা ওয়ার্ল্ড ব্যাংক উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। জনাব আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, নাগরিক চাহিদা পুরনে সিটি কর্পোরেশনের পাশে সেবায় নিয়োজিত সকল প্রতিষ্ঠান সহযোগী হলে সেবার মান বৃদ্ধি সহ নাগরিক সেবা তরান্বিত করা সহজ হবে। মেয়র বলেন, জাতিসংঘ পার্ক নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি, খাল খননে জায়গা অধিগ্রহনে দীর্ঘসুত্রিতা, রাস্তা প্রশস্থ করার পরও বিদ্যুতের খুটি না সরানোর জটিলতা, নালার ভিতর দিয়ে ওয়াসার পাইপ লাইন স্থাপন জটিলতা, টি এন্ড টির তারের জটিলতা, গ্যাস লাইনের জটিলতা, যখন তখন অপরিকল্পিত রাস্তা খোড়াখুড়ির জটিলতা, মাদক ব্যবহার ও বিক্রী রোধ সংক্রান্ত কার্যক্রম, যানজট জটিলতা, ফুটপাত ও রাস্তা দখল জটিলতা, সরকারী দপ্তর সমূহের পৌরকর নিয়মিত পরিশোধ না করার মানসিকতা সহ নানামূখি জটিলতার বিষয়গুলো তিনি তুলে ধরেন। মেয়র তাঁর গৃহিত কার্যক্রম প্রসঙ্গে বলেন, নগরীকে পরিবেশ বান্ধব স্বাস্থ্যকর নগরী গড়ার প্রত্যয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি নাগরিক স্বার্থে রাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং ডোর টু ডোর বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারন কার্যক্রম এবং নগরীর মোড়, গোলচত্বর, ফুটপাত, মিডআইল্যান্ড সবুজ করা, যাত্রী ছাউনি নির্মাণ সহ তার নানামূখি পরিকল্পনা তুলে ধরে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর ভুমিকা প্রত্যাশা করেন। মেয়র বলেন, প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভার সিদ্ধান্ত ও আলোচ্য সুচি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করা হবে। সমন্বয় সভার সংশ্লিষ্ট দপ্তর সমূহের প্রস্তাবনা সমূহ সিটি কর্পোরেশন বাস্তবায়নে কার্য্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে। সমন্বয় সভায় দপ্তর প্রধানগন তাদের সীমাবদ্ধতা সহ যাবতীয় বিষয় সমূহ সিটি মেয়রকে অবহিত করেন এবং তারা সিটি মেয়রের যাবতীয় নাগরিক সেবায় সহযোগিতা দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।