হাটহাজারীতে ঈদ বাজার জমে উঠেছে

0
307

বিপ্লব দে, হাটহাজারী,নিউজচিটাগাং২৪.কম।।
হাটহাজারীতে ঈদকে সামনে রেখে কেনাকাটা জমজমাট হয়ে উঠছে। সকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত দোকানে বেচাকেনা চলছে। hathazari eidbazarপ্রত্যেক দোকানে নারী পুরুষদের উপচে পড়া ভীড় । শাড়ী, প্রসাধনির দোকান, জুতার দোকান, গৃহস্থালী কাজে ব্যবহৃত নিত্য প্রয়োজনীয় দোকানে ভীড় বাড়ছে । হাটহাজারী সদরের বিভিন্ন মার্কেটের দোকান গুলো আধুনিক সাজে সাজিয়েছে ঈদ বিক্রির জন্য। তাছাড়া প্রত্যেক মার্কেট ও দোকানে মনোরম দৃষ্টি নন্দন আলোক সজ্যা করা হয়েছে। তবে কোন দোকানে পণ্যের দাম কম নিচ্ছে না। রমজানের সিয়াম সাধনা ও সংযমের এদিনে ব্যবসায়ীরা ধর্মীয় বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে যাচ্ছে, চড়াদামে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন পোশাক । তাছাড়া নানা কৌশলে ক্রেতাদেরকে প্রচুর পরিমানে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেক ক্রেতা সাধারন । হাটহাজারী সদরে বিলাশ বহুল অত্যাধুনিক মার্কেটে আকর্ষনীয় দোকান প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় গ্রাম অঞ্চলের হাট বাজারের দোকান গুলোতে বেচা বিক্রি লাটে উঠার উপক্রম। হাটহাজারী বিভিন্ন এলাকা থেকে নগরীতে যাওয়ার গাড়ী বিড়ম্বনার কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে হাটহাজারী থেকে কেনাকাটা করছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে। হাটহাজারী সদরে মাইক দিয়ে ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষন করা হচ্ছে। ফলে শব্দ যন্ত্রের অত্যচারে পথচারী ও বাসা বাড়ীর লোকজন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। শান্তিতে বাজার কিংবা বাসষ্টেশন কোন স্থান থেকে মুঠোফোনে কথা বলা যাচ্ছে না ।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা গেছে ,হাটহাজারীর সরকারহাট বাজারের গণি শপিং সেন্টারে ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে। মদুনাঘাট এলাকার ৩/৪টি মার্কেটে বেচাবিক্রি বেশ জমে উঠছে। একই ভাবে বুড়িশ্চর, নজুমিয়াহাট, আমান বাজার, ফতেয়াবাদস্থ চৌধুরীহাটেও বেচাকেনা বেশ জমছে। তবে কাটিরহাট সহ বেশ কিঠু বাজারে ক্রেতার অভাব রয়েছে বলে অনেক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন। তারা বলছেন হাটহাজারী সদরে বিলাসবহুল মার্কেট ও বিভিন্নপুরষ্কার ঘোষনা করাই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যাদের আত্মীয় স্বজন প্রবাসী তারাই এখন কেনাকাটার দৌড়ে এগিয়ে আছে। বিত্তশালীরা রমজান শুরুর পূর্বেই তাদের কেনাকাটা সেরে ফেলেছে। তারা কেনাকাটা ছাড়লেও মার্কেটে ঘুরছে আধুনিক রুচিসম্মত ডিজাইনের কিংবা ফ্যাশনের কোন কাপড় ছোপড় আসছে কিনা দেখার জন্য। তারা রুচি সম্মত পরিধেয় দেখে দামের কোন তোয়াক্কা না করে নিজেদের পছন্দের জিনিস ক্রয় করছে। ইছাপুর বাজারের কাশেম সেন্টার তেমন জমে উঠেনি। কারণ পাশেই হাটহাজারী বাজারে অত্যাধুনিক মার্কেট ও দোকানে অত্যাধুনিক পছন্দের জিনিস পাওয়া যাচ্ছে । হাটহাজারী বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে বাজার করতে গিয়ে পর্যাপ্ত শৌচাগারের অভাবে অনেক ক্রেতাকে বিশেষ করে মহিলাদের সীমাহীন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে নিত্যদিন।মার্কেটে কেনা কাটা করতে আসা এক মহিলা ক্রেতা মার্কেটে বখাটেদের ভীড়ের ব্যাপারেও আক্ষেপ পোষন করেন ।
তাছাড়া বিভিন্ন মার্কেটে লাকি কুপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে ক্রেতা আকর্ষণের জন্য। সিটি সেন্টার, তৈয়বা নূর কমপ্লেক্স, শাহজাহান সেন্টার, গণি মার্কেট, সর্ত্তার শপিং সেন্টার, সোলাইমান মার্কেট, সিকদার টাউয়ার, উপজেলা পরিষদ মার্কেট, চৌধুরী শপিং, ছিদ্দিক মার্কেট, এস.এস. টাওয়ার, একে প্লাজা, দারুচ্ছালাম প্লাজা, জেএন্ডজে শপিং সেন্টার, এস.এ শপিং সেন্টার প্রভৃতি মার্কেটে ঈদ বেচাকেনা জমজমাট রূপ নিয়েছে। কিন্তু বাসষ্টেশন থেকে বাজার পর্যন্ত বড় বড় সৃষ্ট গর্তে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে গাড়ি ও পথচারী চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ার কারনে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে এবং সীমাহীন যানজট লেগেই থাকে নিত্যদিন । ক্রেতাদের ভিড়ে বিভিন্ন স্থানে দর্জির দোকান গুলো তাদের কাপড় সেলাইয়ের অর্ডার বন্ধ করে দিয়েছে। বিভিন্ন সেলাইয়ের দোকান অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়ে কাপড়ের দামের দ্বিগুণ হারে সেলাইয়ের টাকা নিচ্ছে। দর্জির দোকানের মালিকরা বলছে দর্জি শ্রমিককে এখন দ্বিগুণ টাকা বেতন দিয়ে কাজে রাখা হয়েছে। হাটহাজারী কাচারী সড়ক বণিক সমিতি ক্রেতাদের জন্য মেগা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। এিেটকে অনেকে আবার ক্রেতা আর্কষনের পাশাপাশি টাকা আয়ের ব্যবসাও বলছেন । হাটহাজারীতে এখন ১ হাজার থেকে দেড় লক্ষ টাকা দামের শাড়ি পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। ২ থেকে ১৫ হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবী ও বিভিন্ন দোকানে ও মার্কেটে বিক্রির জন্য আনা হয়েছে। সেলোয়ার কামিজ ও ত্রিপ্রিজ ২ থেকে ৪০ হাজার টাকা দামের বিক্রি হচ্ছে। সদর এলাকার চারটি বাটার দোকান, ও ২ শতাধিক অন্যান্য জুতোর দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। ইলেক্ট্রনিক্স দ্রব্যের বিক্রিও জমজমাট ভাবে চলছে। মুদির দোকানে দীর্ঘ লাইন পরিলক্ষিত হচ্ছে। মার্কেটের নিরাপত্তার বিধানের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন সহ টহল ব্যবস্থা জোড়দার করা হয়েছে। উঠতি বয়সের ছেলেদের প্রথম পছন্দ কাজ করা কালার পাঞ্জাবী। মহিলাদের পছন্দ গর্জিয়াস হাতের কাজ করা সূতির ত্রিপিজ। সব মিলিয়ে হাটহাজারী উপজেলা সদরে ঈদের কেনাকাটা জমজমাট । এদিকে লন্ড্রির দোকানদারেরাও ঈদ মৌসুমে কিছু বাড়তি আয়ের জন্য অর্ডার নিচ্ছে। তাছাড়া ফুটপাত দখল করে কাচাড়ী সড়ক সহ বিভিন্ন সড়কে অবৈধভাবে গড়ে উঠা দোকান গুলো বেশ জমতে শুরু করেছে । এলাকার হত দরিদ্রদের কাছে যাকাত ফিৎরার টাকা হাতে না আসায় তারা এখন ঈদের বাজার করতে পারছেনা। তবে তাদেরও আশা শেষ পর্যন্ত পরিবারের জন্য সামন্য হলেও ঈদের কেনাকাটা করবে ।
এ ব্যাপারে হাটহাজারী থানার অফিসার ইনচার্জ এ.কে.এম.লিয়াকত আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,ক্রেতা সাধারন যেন ঈদের কেনাকাটা নিরাপদে করতে পারে সেজন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।