হাটহাজারীর শীর্ষ সন্ত্রাসী পিস্তল সোহেল আটক

0
158

হাটহাজারী সংবাদদাতাঃ
হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের উদালিয়া গ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী মাদক ও ইয়াবা সম্ম্রাট সোহেল(৩৫) প্রকাশ পিস্তল সোহেল কে আটক করেছে মডেল থানা পুলিশ। ৫ই ডিসেম্বর বুধবার দুপুর সাড়ে বারটার সময় কাটিরহাট বাজার থেকে আটক করা হয়। আটককৃত মাদক সম্ম্রাট সোহেল ফটিকছড়ির ভুজপুর থানার সুয়াবিল ইউনিয়নের খন্ডলী পাড়ার এক নম্বর মানিক প্রকাশ মদ ব্যবসায়ীও গাছ চোর মানিকের ছেলে।

জানা যায়, উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড উদালিয়া গ্রামে বেপারোয়া হয়ে উঠা মাদক ও ইয়াবা ব্যবসায়ী সোহেল, টিটু,মিয়ে, এরশাদ,কামাল,রায়হানসহ অনেকেই পুরা এলাকায় বিশৃংঙ্খলা সৃষ্ট করে উত্তেজনা ঘটায়। এরপর টিটু ও সোহেল তাদের বাহিনী নিয়ে এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দেয় বলে স্থানীয়রা জানান। শুধু তা নয় ওই এলাকায় তারা এক ধরনের তান্ডব চালায়। যা মডেল থানার ওসি আদেশ কে বৃদাঙ্গুলি দেখিয়ে আবার তারা এলাকার মানুষ কে জিম্মী করে প্রকাশ্যে টাকা ছিনতাই করছে।

গোপন সুত্রে জানা যায়, আটককৃত পিস্তল সোহেল গত ইউপি নির্বাচনে সময় মির্জাপুর ইউনিয়নের সরকারহাট বাজারে জুয়েল নামে এক যুবককে গুলি করে যারা হত্যা করেছে তার মধ্যে সেও জড়িত বলে জানা গেছে। শুধু তা নয় এলাকায় তার বিরুদ্ধে ৫/৭ টির বেশি অভিযোগ এবং মন্দাকিনী বিট কর্মকর্তাদের উপর হামলার এবং মাদকের ও কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে ও জানা যায়।

এস আই আনিস আল মাহমুদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তেতে কাটিরহাট বাজার থেকে সোহেল নামে এক যুবক কে আটক করে থানা এনে প্রাথমিকভাবে অস্ত্রের জন্য জিঁজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের জানানো হবে বলে জানান।

উল্লেখ্য, নাছির বাহিনীর অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী পিস্তল সোহেল এবং পুয়াখোর টিটুর দফায় দফায় হামলায় সাজ্জাদ ও বাবপু নামে দুই যুবক গুরুতরভাবে আহত করার খবর পাওয়া গেছে। ২১শে নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় নোয়াপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। মাহফিলের দাওয়াত দেওয়া শেষে মোটরসাইকেল করে কাটিরহাট থেকে বশিরহাট যাওয়ার সময় নোয়াপাড়ার নুরুল হুদা মেম্বারের বাড়ীর সামনে আগে থেকে ওতপেতে থাকা
মাদক ব্যবসায়ী টিটু প্রকাশ পুয়াখোর টিটু এবং ইয়াবা সম্ম্রাট, জুয়েল হত্যামামলার আসামী সোহেল প্রকাশ টাউট সোহেল,বদরং বলী কামাল প্রকাশ কালা কামাল,বল্টন এরশাদ,কালা মিয়ে,ট্যাবলেট রায়হানসহ তাদের বাহিনী আক্রমণ করে সাজ্জাদ এবং বাবপু কে লোহার রট,দা,দেশি অস্ত্র,পিস্তল দিয়ে বেদম প্রহার করে। তাদের মধ্যে সাজ্জাদ নামের যুবককে অবস্থা খুবই খারাপ। সে বর্তমানে চমেক হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে বলে জানা গেছে। তার আগে গত৩১শে অক্টোবর সকাল সাড়ে আটটার সময় মোটরসাইকেলে শোডাউন দিয়ে অস্ত্র নিয়ে এলাকার যুবকদের ভয় ভীতি,হুমকি ধুমকি দিয়ে গেছেন মাঝের দোকানের ফয়জুল সওদাগর কে। যাওয়ারপর বিকাল সাড়ে চারটার সময় নোয়াপাড়ার আশেকর দোকানের সামনে জড়ো হয়ে অস্ত্রসজ্জিত নিয়ে বশিরহাট থেকে কাটিরহাটগামী এবং কাটিরহাট থেকে বশিরহাটগামী সিএনজি অটোরিক্সাগুলো চেক করছেন। এমন সময় হারুনুর রশিদ কালুর বড় ভাই সাইদুল মোটরসাইকেল করে কাটিরহাটে যাওয়ার সময় মাদক বাহিনীর আস্তানার সামনে গেলেই তারা তাকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে গাড়িটি ভেঙ্গে দিয়ে তাকে মারধর করে জবাই করার জন্য জঙ্গলে নিয়ে যায়। এমন খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাদের কে ধাওয়া দিলে তারা গুলি বর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এ সময় সাইদুল তাদের সাথে ধাক্কাধাক্কি করে কোনমতে প্রাণে বেচেঁ আসে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চরম আতংক এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে।
দীর্ঘদিন ধরে মাদক আর ইয়াবা বাহিনী তাদের নিরাপদ রাস্তা হিসেবে ধলই বাড়বকুণ্ড সড়কের খণ্ডলী পাড়ার সংযোগ রাস্তা দিয়ে রমরমা ব্যবসা চলছিল। দেখলেও কেউ কোন প্রতিবাদ করতো না। কারণ তারা সবাই সম্প্রতি মাদক,অস্ত্র ও ভয়-ভীতির মামলা( জিআর ৭/১২, ৭/(১)১২- ১৯৯০ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্ররণ ও দমন আইনের (ঘ) ধারা, জিআর ১০৭/১৪, মামলা ১৪/(৫)১৪- ধারা ১৪৩/৪৪৭/৩৭৯/৪২৭/৫০৬ দঃ বিঃ, মামলা- ১০/(৪)১৪ ধারা- ১৪৩/৪৪৭/৩৭৯/৪১১/৫০৬ দঃবিঃ, এবং ৭/১২, ৭/(১)১২ – ১৯৯০ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্ররণ ও দমন আইনের ২২(ঘ) ধারা মোট ৮ মামলার আসামী) গ্রেফতার হয়ে জেলখানা হাজতে আটক থাকার পর জামিনে আসা নাছির উদ্দীনের অনুসারী। আবার সে (নাছির) চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালামের অনুসারী।
এমন খবর পেয়ে পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিকভাবে ছুটে আসেন মডেল থানার ওসি বেলাল উদ্দীন জাহাঙ্গীর।
তিনি এসে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে বলেন এমন ঘটনার যেন আর কোন পুণরাবৃত্ত না ঘটে সে ব্যাপারে সবাই কে যার যার অবস্থানে নিরব থাকতে বলে। তারপরও চলতে থাকে চরম উত্তেজনা এবং আতংক। এরপর আবারও মডেল থানার ওসি গত বৃহস্প্রতিবার রাতে মাদক বাহিনীর প্রধান নাছিরের পক্ষে থেকে উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক নাজমুল হুদা মনি,ইব্রাহিম হোসেন মাস্টার,শফিউল আকবর মাসুদ এবং এলাকার পক্ষ থেকে সিরাজুল ইসলাম ইমরান মেম্বার,সাবেক মেম্বার জসিম উদ্দীন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ডা আলা উদ্দীন মাহমুদ কে ডেকে হুশিয়ার করে একটি সমেঝতা করে দেয়। কিন্তু এ সমেঝতা কিংবা আপোষ মানতে নারাজ মাদক বাহিনী। তারা এ সমেঝতার সুযোগ কে কাজে লাগাতে বেশ মরিয়া হয়ে উঠে।
এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে আবারও আতংক এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে। কেননা যে জায়গায় ওসি কে ওরা কোন পাত্তাই দিচ্ছে না সে জায়গায় আমরা জিম্মী ছাড়া আর কিছুই না।