২৯ এপ্রিলে আমাদেরকে ব্যাথাতুর করে তুলে

0
63

চট্টগ্রাম সাহিত্য পাঠচক্রের উদ্যোগে ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের স্মরণে এক স্মরণ আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠান সংগঠনের সহ সভাপতি ডাঃ মোঃ জামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে গত ২৮ এপ্রিল বিকেল ৫টায় সংগঠনের দোস্তবিল্ডিংস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সহকারী জজ এড. মনজুর মাহমুদ খান। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক দেব প্রসাদ দেবু। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবালের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেকমন্ত্রী জহুর আহমদ চৌধুরী ফাউন্ডেশনের পরিচালক শরফুদ্দীন চৌধুরী রাজু, প্রধান শিক্ষক বাবুল কান্তি দাশ, সংগঠক শওকত আলী সেলিম, কবি তরণী সেন, মামুরখাইন প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এম, নুরুল হুদা চৌধুরী, আনোয়ারা উপজেলা যুবলীগের সহ সভাপতি সন্তোষ কুমার নন্দী, কবি সজল দাশ, দক্ষিণজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সালাউদ্দীন লিটন, নারীনেত্রী সোমিয়া সালাম, উচ্ছ্বাসের সভাপতি মোঃ আজিম উদ্দীন, সুমন চৌধুরী, বৃষ্টি দাশ, মোঃ তাইফুল আলম তামিম, প্রমুখ। সভায় প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ভয়াল ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের মানুষের যে ক্ষতি হয়েছে তা ভুলার নয়। ভয়াল ২৯ এপ্রিলে কক্সবাজার, কুতুবদীয়া, মহেশখালী, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, বাঁশখালিসহ বিভিন্ন উপকূলের অধিবাসীর লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা আমাদের বাংলাদেশের ইতিহাসে এক করুণ কাহিনী। ২৯ এপ্রিলে স্বজন হারানোর বেদনা আজও আমাদেরকে ব্যাথাতুর করে তুলে। তিনি আরো বলেন উপকূলবাসীর জীবনমান সবসময় নিরাপত্তাহীন। উপকূলবাসীর জীবন মান উন্নয়ন বিশেষ করে বেড়িবাঁধ রক্ষাসহ বিভিন্ন কর্মসূচী সরকারি ও বেসরকারিভাবে রক্ষা করতে হবে। প্রধান বক্তা সাংবাদিক দেবপ্রসাদ দেবু বলেন আমার জীবনের সবচেয়ে করুণ ও বেদনাদায়ক মুহুর্ত হলো ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলে নিহতদের লাশের সারি দেখে আমি হতবাক। এ যেন লাশ নয় কচুরিপাতার মত মানুষের লাশ পানিতে, গাছে, রাস্তায়। ঐ দিনে আমার তোলা দূর্লভ ও বেদনাদায়ক লাশের ছবিগুলো সারাপৃথিবীর পত্র পত্রিকায় আমার মাধ্যমে সরবরাহ করেছে বিভিন্ন গণমাধ্যম। ঘূর্ণিঝড়ের ৩ দিন পরেও আমি অনেক লাশের ছবি তুলেছি। যার স্মৃতি আজও আমাদে কাঁদায়। কোন পরিবারে মা বাবা, ভাই বোন সকলের মধ্যে শুধু একজন ভাই, আবার কোন পরিবারের দাদী আর নাতি, আবার কোন পরিবারে শুধু ছোট্ট খোকা বেঁচে আছে আবার কোন পরিবারে শুধু বাবা, কোন পরিবারে মা বেঁচে আছে। আবার কোন কেউ বাঁচতে পারলনা। লক্ষ লক্ষ মানুষ সেদিন মৃত্যুবরণ করেছে। বক্তারা বলেন এসমস্ত প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষা করতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে বেড়িবাঁধ রক্ষা, বৃক্ষরোপন, সবুজবেস্টনী নানা প্রাকৃতিক কর্মসুচী বাস্তবায়ন করতে হবে। সভা শেষে ভয়াল ২৯ এপ্রিল নিহতদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন মোঃ জামাল উদ্দীন।