২ লাখ মেট্রিক টন আলু নষ্ট হবে

0
154

চাঁদপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি আলু উৎপাদিত হয়েছে। এতে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন আলু হিমাগারের বাইরে রাখতে হবে। ফলে আলু ব্যবসায়ী ও কৃষকরা পড়েছে দুশ্চিন্তায়। কারণ, চাঁদপুরের হিমাগারগুলোর ধারণক্ষমতা মাত্র ৫০ হাজার মেট্রিক টন। এতে আলু নষ্ট হয়ে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।

চলতি বছর ১২ হাজার ১শ ৮৮ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৩শ ৩৯ মেট্রিক টন। কিন্তু হিমাগারের অভাবে শতকরা ৮০ ভাগ উৎপাদিত আলু প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। যদিও জেলা কৃষি অফিস বলছে, সঠিক পরিচর্যায় ৩/৪ মাস হিমাগারের বাইরেও আলু সংরক্ষণ করা যায়।

চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র, কচুয়ার সাচার, মতলব দক্ষিণ ও উত্তর এবং চাঁদপুর সদর উপজেলার উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকায় আলু চাষ হয়েছে বেশি। ওইসব এলাকার কৃষকরা ডায়মন্ড, মুন্টা, গ্রানোলা, কার্ডিনাল, এস্টারিকশ, সাগিতা ও পেক্ট্রোনিজ জাতের আলু চাষ করে থাকে। এসব নতুন জাতের আলু উৎপাদনে জেলা কৃষি অফিস প্রতিনিয়ত তাদেরকে পরামর্শ দিচ্ছে। এছাড়াও পরিমিত সার ও কীটনাশক ব্যবহার, সঠিক পরিচর্যা, সময় মতো বীজবপন, ভাল বীজ বুনন, ব্যাংক ঋণ প্রদানের কারণেই এবছর চাঁদপুরে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে।
আলু
সূত্র মতে, এ বছর চাঁদপুর সদরে ১ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে ৩৬ হাজার ৯শ ৯৫ মেট্রিক টন, মতলব উত্তরে ৬শ হেক্টর জমিতে ১৫ হাজার মেট্রিক টন, মতলব দক্ষিণে ৪ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে ৮৭ হাজার ৫শ ৮৫ মেট্রিক টন, হাজীগঞ্জে ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ২১ হাজার ২শ ৭০ মেট্রিক টন, কচুয়ায় ৪ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে ৮৭ হাজার ২শ ৩০ মেট্রিক টন, ফরিদগঞ্জে ১শ ১৫ হেক্টর জমিতে ২ হাজার ৭শ ৬০ মেট্রিক টন, হাইমচরে ১শ ৫৮ হেক্টর জমিতে ৩ হাজার ৯শ ৩৪ মেট্রিক টন ও শাহরাস্তিতে ৩০ হেক্টর জমিতে ৫শ ৭০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে।

এদিকে চাঁদপুর সদরের মনোহরখাদি, পূর্বালী, অ্যাপোলো, বিএডিসি, মতলবের করিম ও মার্শাল, হাজীগঞ্জের মান্নান, কচুয়ার গুলবাহারসহ ১২টি কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ৫৪ হাজার মেট্রিক টন। অথচ এবছর উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৩শ ৩৯ মেট্রিক টন।

সে হিসেবে ২ লাখ ১ হাজার ৩শ ৩৯ মেট্রিক টন আলু বেশি উৎপাদিত হয়েছে। ফলে প্রতি বছরের মতো এবারও ধারণক্ষমতার অনেক বেশি আলু উৎপাদিত হওয়ায় সংরক্ষণ নিয়ে চিন্তিত কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

কৃষকরা জানায়, এ বছর আলুর দাম কম, তবে ফলন ভাল হয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত হিমাগার না থাকায় সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় আলু নষ্ট হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর এভাবে চলতে থাকলে এক সময় আলু চাষে কৃষকরা আগ্রহ হারাবে।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম বাংলামেইলকে জানান, উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোর কাছাকাছি হিমাগার স্থাপনের চিন্তা ভাবনা সরকারের রয়েছে। তবে হিমাগারের বাইরেও কিভাবে আলু সংরক্ষণ করা যাবে সে ব্যাপারে আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের জানাচ্ছি।