৭৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ ৯ প্রকল্প অনুমোদন

0
56
ফাইল ছবি

নতুন নয়টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একটি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের ৭টি প্রকল্প। বিদ্যু‍ৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে বেসরকারি খাতে ৭৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৫টি নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে।

বুধবার (১৬ মার্চ) মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামের জুলদা ও পটিয়ায় ফার্নেস অয়েলভিত্তিক ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র, আনোয়ারায় ফার্নেস অয়েলভিত্তিক ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হবে।

এছাড়া রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় ৩০ মেগাওয়াট (এসি) ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ভোলায় ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল ডুয়েল-ফুয়েল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রয় কমিটির এ বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বিদ্যু‍ৎ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে মোট ৯টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, বেসরকারি খাতে ৫টি নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে চট্টগ্রামের জুলদায় ফার্নেস অয়েলভিত্তিক ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করবে ‘অ্যাকর্ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিসেস লিমিটেড’; চট্টগ্রামের পটিয়ায় ফার্নেস অয়েলভিত্তিক ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করবে ‘প্রিসিশন এনার্জি লিমিটেড’ ও চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ফার্নেস অয়েলভিত্তিক ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করবে ‘ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড’।

অতিরিক্ত সচিব জানান, উপরোক্ত তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১৫ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ ক্রয় করবে সরকার। প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুতের ট্যারিফ মূল্য হচ্ছে ১৪ টাকা ৭০ পয়সা।

অপর দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় ৩০ মেগাওয়াট (এসি) সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যৌথভাবে স্থাপন করবে ‘ইন্ট্রাকো সিএনজি লিমিটেড’ ও ‘জুলি নিউ এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড’। এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২০ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কেনা হবে। এতে প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম পড়বে ১২ টাকা ৮০ পয়সা।

ভোলায় ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল ডুয়েল-ফুয়েল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করবে ‘শাপুরজি পালোনজি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ক্যাপিটাল কোম্পানি লিমিটেড’। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে ২২ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কেনা হবে। এতে প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম পড়বে গ্যাসে ৩ টাকা ১৯ পয়সা ও ডিজেলে ১৩ টাকা ৫৭ পয়সা।

অতিরিক্ত সচিব জানান, এছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগের আরও দু’টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর একটি হচ্ছে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চতুর্থ ইউনিটের সংস্কার। চায়না এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ যৌথভাবে এ সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করবে। এ কাজে ব্যয় হবে ১ হাজার ৫৪৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

অন্যদিকে বিল্ড-ওউন-অপারেট (বিওও) ভিত্তিতে কালিয়াকৈরে ১৪৯ মেগাওয়াট এইচএফও/গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের লিড অ্যান্ড অপারেটিং সদস্য পরিবর্তনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তিত কোম্পানি হিসেবে এ কাজটি পেয়েছে ‘সামিট পাওয়ার লিমিটেড’। প্রথমে শ্রীলঙ্কার একটি প্রতিষ্ঠান এ কাজটি পেয়েছিল। এখান থেকে প্রতি কিলোওয়াট/বিদ্যুৎ ক্রয়ে ব্যয় হবে ৪ টাকা ৫২ পয়সা।

অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন ‘ঢাকা পরিবেশবান্ধব টেকসই পানি সরবরাহ প্রকল্প’র আওতায় ম্যানেজমেন্ট, ডিজাইন ও সুপারভিশন পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে এ কাজটি পেয়েছে ‘মট ম্যাগডোনাল্ড লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ১৫৫ কোটি ৩ লাখ টাকা।

এছাড়া শাহজালাল সার কারখানার ফাইনাল একসেপট্যান্স সার্টিফিকেট প্রদানের পর পরবর্তী এক বছরের জন্য কারখানা পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে সহযোগিতার জন্য প্রকল্পের সাধারণ ঠিকাদার মেসার্স কমপ্ল্যান্টের সঙ্গে সম্পাদিতব্য চুক্তি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এক বছর কোম্পানিটির ৬০ জন জনবল কাজ করবে। এ সময় তারা বাংলাদেশের কর্মীদেরও প্রশিক্ষণ দেবে। এতে ব্যয় হবে ৬৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।