চাঁদাবাজ শ্রমিক নেতা আটক

0
96

জামায়াত পন্থি নেতদলীয় পরিচয় আড়াল করে অটোরিকশাসহ হালকা মোটর যান সাম্রাজ্যের নতুন রাজা হিসেবে দীর্ঘদিন রাজত্ব করে কোটি টাকা হাতি নিলেও শেষ পর্যন্ত ধরাশায়ী হয়েছেন কট্টর জামায়াত সমর্থক হারুনুর রশিদ।

চট্টগ্রাম অটোরিকশা-অটোটেম্পো শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে নগরীতে চাঁদাবাজি করে আসছেন খোলস পাল্টাতে পটু জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের পরিবহনের দায়িত্বে থাকা এই হারুনুর রশিদ।

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নগরীর সিএনজি অটোরিকশা মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, শামসুল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো.ফারুক জলিল ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় মহাসড়ক ও নগরে পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রতি তাগিদ দেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এজন্য মহাসড়ক ও সিটিতে ইজি বাইক, ব্যাটারি চালিক রিকসা বন্ধে কঠোর নির্দেশ দেন তিনি।

মিটারে না চলা, অনিবন্ধিত গাড়ি চলাচল ও ব্যাটারি রিকসা চালানোর জন্য হারুণকে দায়ী করেন চট্টগ্রাম সিএনজি বেবি টেক্সি মালিক সমিতির নেতারা। তাদের অভিযোগ সংগঠনের স্টিকার ব্যবহার করে নগরে অবৈধ গাড়ি চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে হারুণ। আদালতের দোহাই দিয়ে অবৈধ রিকসা ও টেক্সি চালাচ্ছে।

চট্টগ্রাম সিএনজি বেবি টেক্সি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসকে শিকদার বাংলানিউজকে বলেন, আদালতের রায়ের কথা বলে ব্যাটারি চালিত রিকসা ও অবৈধ গাড়ি চালানোর সুযোগ দিয়ে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা নিচ্ছে কট্টর জামায়াত সমর্থক হারুন।

পরিবহন সেক্টর থেকে আদায় করা চাঁদা নাশকতায় ব্যায় করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএনপি জামায়াতের আন্দোলনের সময় শত শত গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে হারুনের নির্দেশে।

শনিবার সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় হারুনুর রশিদ উপস্থিত থাকলেও পাঁচটি মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের বিরোধীতার মুখে বক্তব্য দিতে পারেনি। হা্রুনের চাঁদাবাজির বিষয়টি প্রকাশ্যে উত্থাপিত হলে উপস্থিত শ্রমিক নেতারা তাকে গ্রেফতারের দাবি জানান।

ইস্টিকার বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে হারুনুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সংগঠনের সদস্য হতে হলে ১ হাজার ২৫০টাকা ফি দিতে হয়। এরপর প্রতি মাসে ৩০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়। এর বাইরে কোন টাকা নেওয়া হয়না। সিএনজি চালিত অটো রিকসা শ্রমিকদের অভিযোগ প্রতি মাসে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয় হারুনকে।

জামায়াতের কট্টর সমর্থক হারুন বর্তমানে কোন দলের সঙ্গে যুক্ত নেই বলে দাবি করলেও বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে মিছিল নিয়ে যেতে দেখা গেছে। জামায়াত থেকে উঠে আসার বিষয়টি স্বীকার করে বিএনপির সহ-শ্রমিক বিষয়ক সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিন জানিয়েছেন হারুন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়।