১৯৫৮ সালে বঙ্গবন্ধু উখিয়ার যে বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল

0
80

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কক্সবাজার জেলার উখিয়ার ইনানী চেংছড়ি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ৫৯ বছরের পুরনো ইতিহাস। সেই ইতিহাসের নাম ‘ইনানীতে বঙ্গবন্ধুর অজ্ঞাতবাস’। সাগর পাড়ের চেংছড়ি অরণ্যঘেরা আদিবাসী পল্লীর প্রয়াত ফেলোরাম রোয়াজা চাকমার বসতভিটা এখন সংরক্ষিত এলাকা। যেখানে সরকারী উদ্যোগে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালীর স্মৃতিবিজড়িত সেই আদিবাসী পল্লীতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষে সাইনবোর্ডটি ঝোলানো হয়। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের সামরিক শাসনের সময় রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থায় বঙ্গবন্ধু এসেছিলেন কক্সবাজারে। চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের প্রয়াত তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতা আছদ আলী বলির সাম্পানে করে মহেশখালীর সোনাদিয়া হয়ে কক্সবাজার আসেন বঙ্গবন্ধু। কয়েকটা দিন কাটানোর জন্য জেলা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে উখিয়ার ইনানী অরণ্যে যান। সেখানে ছিলেন প্রভাবশালী উপজাতি নেতা ফেলোরাম চাকমা। চেংছড়ির অরণ্যঘেরা আদিবাসী পল্লীর দাপুটে উপজাতি এ নেতা প্রয়াত ফেলোরাম রোয়াজা চাকমা ছিলেন অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ ভক্ত। বঙ্গবন্ধু এসে উঠেছিলেন সেই ফেলোরাম চাকমার টংঘরে। ইনানীতে বঙ্গবন্ধুর অজ্ঞাতবাসের সময়কালে এক নারী ভাত রান্না করে দিতেন। সেই বৃদ্ধা সখিনা খাতুন ১১১ বছর বয়সে মারা গেছেন বছর তিনেক আগে। বঙ্গবন্ধুর ইনানী অরণ্যের অজ্ঞাতবাসের অন্যতম সাক্ষী কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা একেএম মোজাম্মেল হক, উখিয়ার জালিয়াপালং ইনানী-নিদানিয়া এলাকার জমিদার সৈয়দুর রহমান সিকদার, চেংছড়ির আদিবাসী নেতা ফেলোরাম রোয়াজা চাকমা, তাঁর তিন ছেলে ও দুই নাতিসহ অনেকে মারা গেছেন। তবে কালের সাক্ষী হয়ে আছেন ইনানী অরণ্যে বঙ্গবন্ধুর খাবার-দাবারসহ দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত সেদিনের তরুণ ছাত্রলীগ নেতা সোনার পাড়ার মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হাকিম মাস্টার ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক উখিয়া রাজা পালং খয়রাতি গ্রামের শতায়ু আবদুল খালেক। ইনানী চেংছড়ি গ্রামের আদিবাসী নেতা প্রয়াত ফেলোরাম রোয়াজা চাকমার যে ভিটেটিতে বঙ্গবন্ধু জীবনের কয়েকটি দিন ‘অজ্ঞাতবাসে’ অতিবাহিত করেছিলেন, সেই ভিটায় ঝুলানো সাইনবোর্ডে ‘বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত সংরক্ষিত স্থান’ লেখাসহ সেদিনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসও রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হাকিম ইনানীর ওই বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর জন্য নিয়মিত বাজার ও মাঝে মধ্যে রান্না করা খাবারও পাঠাতেন। ওই সময় বঙ্গবন্ধুকে মায়ের মমতায় রান্না করে খাওয়াতেন ইনানীর সখিনা খাতুন।