সীতাকুণ্ডে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত লাশটি ডা. শাহ আলমের

0
160

জেলার সীতাকুণ্ডের কুমিরার ঘাটগড় এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া লাশের পরিচয় মিলেছে। তাঁর নাম মোঃ শাহ আলম (৫৮), তিনি ছোট কুমিরা এলাকার মৃত আজিজুল হক মাষ্টারের পুত্র।

শাহ আলম পেশায় একজন চিকিৎসক। কুমিরাতে তার একটা চেম্বার রয়েছে। কুমিরার ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর পরিচয় নিশ্চিত করেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮ টার সময় কুমিরা ঘাটঘর এলাকার বাইপাশ সড়কের পাশ থেকে পুলিশ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে।

জানাগেছে, প্রতিদিনের মত রোগী দেখে রাত ৯টার দিকে চেম্বার থেকে গাড়ি যোগে চট্টগ্রাম শহরে নিজ বাসায় যাচ্ছিল মোঃ শাহ আলম।

পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা দুষ্কৃতিকারীরা তাকে খুন করে সড়কের পাশে রেখে পালিয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার বড় কুমিরা ফেরিঘাটস্থ বাইপাস ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সকালে এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী সীতাকুণ্ড থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম শেখ বলেন, খবর পেয়ে প্রথমে আমরা ধারণা করেছিলাম সড়ক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিটি মারা গেছে। কিন্তু আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর মনে হচ্ছে তাকে কেউ খুন করে মহাসড়কের পাশে রেখে পালিয়ে গেছে। ব্যাক্তিটি দুর্বৃত্তের হাতে হত্যার শিকার হয়েছে কিনা তা জানার জন্য আমরা সিআইডিতে খবর দিলে তারা এসে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

লাশের সনাক্তকারী কুমিরা ইউপি চেয়ারম্যান মোরশেদ চৌধুরী জানান, কুমিরা হাইওয়ে সড়কে পাওয়া লাশটি ডাঃ শাহ আলমের। যিনি দীর্ঘ ৩০ বছর সৌদি আররে সৌদি আরবের মদিনা হাসপাতালে শিশু বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এলাকার মানুষ সেবা দেওয়া জন্য ছোট কুমিরা বাজারে বেবী কেয়ার নামে ক্লিনিক খুলে ছিলেন। রাতে চেম্বার থেকে চট্টগ্রাম শহরের বাসায় যাওয়ার পথে তাকে খুন করে রাস্তায় ফেলে য়ায়।

চেয়ারম্যান বলেন, তিনি খুবই ভালো মানুষ ছিলেন, একজন অভিজ্ঞ ডাক্তার হয়েও চট্টগ্রাম শহরে চেম্বার না করে নিজ এলাকায় মানুষ সেবা দিতে শহর থেকে প্রতিদিন গ্রামে চলে আসতেন। ছোট কুমিরাতে বেবী কেয়ার নামে তার একটি ক্লিনিক রয়েছে।

স্থানীয় এলাকারবাসীর ধারণা ডা.শাহ আলম কুমিরা থেকে শহরের বাসায় যাওয়ার পথে ছিনতায়কারীদের দ্বারা খুন হন। তবে পুলিশ বলেছে পোষ্টমোটেমের রির্পোট আসার পর বিস্তারিত জানা যাবে।

এব্যাপারে ডা. শাহ আলমের নিকট আত্মীয় ব্যারিষ্টার মীর হেলাল বলেন, অত্যন্ত ঠান্ডা ও শান্ত মানুষটা সৌদি আরবের মদিনা হাসপাতালে শিশু বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। হঠাৎ উনার মাথায় আসলো উনার নিজ এলাকার প্রতি উনার দায়বদ্ধতা আছে, তাই তৎক্ষণাৎ মদিনার চাকরি ছেড়ে বাংলাদেশে ফেরত চলে আসলেন এবং নেমে পড়লেন কুমিরার মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি আধুনিক ও মানসম্মত শিশু সেবা ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায়। এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যেই দিন রাত পরিশ্রম করে সে ক্লিনিক চালু করে সেবা দেয়া শুরু করলেন এলাকাবাসীদের।

কিন্তু এই দেশে তো আর ভালো গুণী লোকের কদর নেই, নেই এদেশে থাকার অধিকার। তাই এই সোনার মনের নিরীহ এবং অত্যন্ত নম্র ও ভদ্র স্বভাবের ডাঃ শাহ আলম ভাইকে লাশ হয়ে পড়ে থাকতে হলো কুমিরার জঙ্গলে। আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে বিচারের আশা করি না।