টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তার দোকান কর্মচারীকে গ্রেফতার

0
63

প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তার দোকান কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে ১১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।

গ্রেফতার সুদীপ্ত সাহা প্রকাশ টিংকু (৩৫) রাঙ্গুনিয়ার স্বনির্ভর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড মহাজন বাড়ির অসীম সাহার ছেলে।

সিএমপি’র অতিরিক্ত উপ কমিশনার (পশ্চিম) পংকজ দত্ত বলেন, শুক্রবার (৯ জুলাই) বিকেল চারটার দিকে আখতারুজ্জামান সেন্টারের দি সন্দ্বীপ জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী প্রদীপ বণিক থানায় এসে অভিযোগ করেন- তার ১২ লাখ টাকা ডাকাতি হয়েছে। দোকানের কর্মচারী সুদীপ্ত সাহা টিংকু চারটি এটিএম কার্ড দিয়ে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আগ্রাবাদ সিএন্ডএফ ভবনে অবস্থিত একটি বুথ থেকে টাকা তুলে বাসায় আসার পথে এই ডাকাতি হয়।

‘এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে আসার সময় কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস থেকে ৪-৫ জন লোক নেমে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে গাড়িতে উঠতে বলে। তিনি গাড়িতে উঠতেই তার সাথে থাকা ১২ লাখ টাকা নিয়ে নেওয়া হয়। এরপর তার কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে বলে মামলা দেওয়ার ভয় দেখায়। একপর্যায়ে গাড়ি বান্দরবানে গিয়ে থামে। সেখানে হাত ও চোখ বেঁধে তাকে পাহাড়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ফোন করে প্রদীপ বণিকের কাছ থেকে বিকাশে টাকা নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে আসেন টিংকু। ’

ডবলমুরিং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, প্রথমে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে টিংকুর বান্দরবানে অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়। বর্ণনা অনুযায়ী, বুথের সামনে মাইক্রোবাসও দেখা যায়। কিন্তু সেই গাড়িতে তাকে তুলে নেওয়ার দৃশ্য বা তথ্য পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ভিডিও ফুটেজ দেখা হয়। টিংকুকে বান্দরবান থেকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদে পুরো ঘটনা আবারও জানার পর কিছু বিষয়ে অসঙ্গতি ধরা পড়ে।

তিনি আরও বলেন, রাতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর টাকাগুলো তিনিই আত্মসাৎ করেছেন বলে স্বীকার করেন। ডাকাতির ঘটনা পুরোটাই তার সাজানো। ঘটনা সবার কাছে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য এবং পুলিশের কাছেও কল লোকেশন যেন বান্দরবান আসে, সেজন্য নিজেই সেখানে চলে যান। এরপর তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, কোতোয়ালী থানাধীন পাথরঘাটা এলাকায় টিংকুর বোনের বাসা থেকে ১১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

সন্দ্বীপ জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী প্রদীপ বণিক বলেন, টিংকু আমার খুবই বিশ্বস্ত কর্মচারী ছিল। গত ২ বছর ধরে আমার প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে। করোনার কারণে বাসা থেকে কম বের হই। আমার এটিএম কার্ডের সব পিন নম্বর টিংকুর জানা ছিল। আগেও একাধিকবার বুথ থেকে টাকা তুলেছে। এমন বিশ্বস্ত কর্মচারী শেষ পর্যন্ত করলো অবিশ্বাসের কাজ।

তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) রাতেই টিংকুকে ৪টি এটিএম কার্ড দেওয়া হয়। পরদিন ১২ লাখ টাকা তুলে সকাল ১১টায় বাসায় ফেরার কথা তার। কিন্তু দুপুর ২টা পর্যন্ত না আসায় এবং ফোন বন্ধ পাওয়ায় তাকে খোঁজাখুঁজি করা হয়। পরে থানায় অভিযোগ করি। বিকাল ৪টায় আমাকে ফোন করে তার সাজানো ডাকাতির ঘটনার কথা জানায়। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি।