ভরা আমন মৌসুমে আরেক দফা বেড়েছে চালের দাম

0
103

চট্টগ্রামে ভরা আমন মৌসুমে আরেক দফা বেড়েছে চালের দাম। প্রতি বস্তা চালের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়ল। একই সঙ্গে বেড়েছে ধানের দামও। মোটা ও সর সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। যুগান্তর

আড়তদাররা বলছেন, মূলত দুই কারণে চালের দাম বাড়ছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি এক দফা চালের দাম বাড়ে। সরকার মিলারদের কাছ থেকে চাল কিনে নিচ্ছে। ফলে আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম কমার কথা থাকলেও এখন ঊর্ধ্বমুখী।

পাহাড়তলী ও খাতুনগঞ্জের চালের আড়তদাররা জানান, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে জিরাশাইল সিদ্ধ, নাজিরশাইল সিদ্ধ, স্বর্ণা সিদ্ধ, পাইজাম সিদ্ধ, মিনিকেট সিদ্ধ, মিনিকেট আতপ, কাটারিভোগ সিদ্ধ, কাটারিভোগ আতপ, বেতি আতপ ও মোটা সিদ্ধের দাম বস্তায় সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এদিকে পরিবহণ ভাড়ার পাশাপাশি বর্তমানে ধানের দামও বেড়েছে। ফলে চালের বাজার বেশ চড়া। কৃষকের ঘরে এখন আমন ধান ওঠা শুরু হয়েছে। দাম যেহেতু কিছুটা বেশি, তাই কৃষকরা যে যার অবস্থান থেকে কিছু ধান বাড়তি দামে বিক্রির আশায় ধরে রেখেছেন। এ কারণে বাজারে চালের এক ধরনের সংকটও রয়েছে।

গত এক সপ্তাহে জিরাশাইল সিদ্ধ চাল বস্তাপ্রতি বিক্রি হয়েছে দুই হাজার ৮৫০ টাকা। এখন ১০০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৯৫০ টাকায়। এ ছাড়া মিনিকেট সিদ্ধ ১৫০ টাকা বেড়ে দুই হাজার ৬৫০ টাকা, পাইজাম সিদ্ধ বস্তায় ৫০ টাকা বেড়ে দুই হাজার ৩৫০ টাকা, কাটারিভোগ সিদ্ধ ২০০ টাকা বেড়ে তিন হাজার ২০০ টাকা, কাটারিভোগ আতপ বস্তাপ্রতি ৩০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৩০০ টাকা, মিনিকেট আতপ ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৫০০ টাকা এবং পাইজাম আতপ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৩৫০ টাকা। অন্য দিকে অপরিবর্তিত আছে স্বর্ণা সিদ্ধ, বেতি আতপ ও মোটা সিদ্ধ চালের দাম। বর্তমানে বেতি আতপ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ২৫০ টাকা, মোটা সিদ্ধ চাল এক হাজার ৮৫০ টাকা এবং স্বর্ণা সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ১০০ টাকায়।

চালের আড়তদাররা বলছেন, কৃষকের ঘরে নতুন ধান অথচ এখন বাজার চড়া। কয়েক বছর আগেও মনপ্রতি ধানের গড় মূল্য ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। বর্তমানে সেটি হাজার পেরিয়ে গেছে। বাজারে আগে নতুন ধানের একটা প্রভাব থাকত। উত্তরাঞ্চলের মোকামগুলোতে ধান বিক্রি হচ্ছে মনপ্রতি এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়া সরকার কিনছে মোটা ধান। এর প্রভাবে ধান চালের বাজার আর নিয়ন্ত্রণে থাকছে না।

চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগ আট জেলায় সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৪৮ হাজার ১৬৪ টন। জেলার মধ্যে কক্সবাজার জেলায় সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৭৯৭ টন, বি-বাড়িয়া জেলায় ১৪ হাজার ২৪০ টন, নোয়াখালী জেলায় আট হাজার ৩৫৬ টন, ফেনী জেলায় ২ হাজার ৩৮৪ টন, কুমিল্লা জেলায় ১০ হাজার ৩০৪, চাঁদপুর জেলায় দুই হাজার ৩২০ টন ও লক্ষ্মীপুর জেলায় তিন হাজার ৬০১ টন।

চট্টগ্রাম জেলায় সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে শুধু সীতাকুন্ড, ফটিকছড়ি ও পটিয়া উপজেলা থেকে পাঁচ হাজার ১৬২ টন। এসব উপজেলার মধ্যে সীতাকুন্ড থেকে এক হাজার ৭৯৮ টন, ফকিছড়ি থেকে দুই হাজার ৫২০ টন ও পটিয়া থেকে ৮৪৪ টন।

চাক্তাইয়ের আড়তদার সাইফুল ইসলাম বলেন, নানা কারণে বাড়ছে চালের দাম। পরিবহন খরচ বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। সরকার এখন মাঠ পর্যায় থেকে ধান-চাল কিনছে। এ ছাড়া ধানের দাম বেশি হওয়ায় অনেক প্রান্তিক কৃষক ধান বিক্রি করছেন না। এর ফলে ধানের দাম বেশি। আর ধানের দাম বেশি হওয়ায় চালের দাম বাড়ছে।